গোপালগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর,প্যাড ও সীল জাল করে অবৈধ এডহক কমিটির অনুমোদন

0
335

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর ও সীল জাল করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে অবৈধ এডহক কমিটির অনুমোদনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলতলী ইউনিয়নের বৌলতলী সাহাপুর সম্মিলনী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম বিষয়টি জানিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড ঢাকার চেয়ারম্যান বরাবরে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বৌলতলী সাহাপুর সম্মিলনী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কারনে গত ২২ জানুয়ারী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর এডহক কমিটি তৈরীর আবেদন জানিয়ে একটি দরখাস্ত প্রেরন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষীতে বোর্ড কতৃপক্ষ ১ ফেব্রুয়ারী ২২৪৬ (৩) স্বারকে একটি পত্র প্রেরন করে প্রধান শিক্ষককে একটি এডহক কমিটি গঠনের জন্য অনুমতি প্রদান করেন। তবে সভাপতি ব্যাতিত অভিবাবক প্রতিনিধি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কতৃক মনোনীত ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কতৃক মনোনীত শিক্ষক প্রতিনিধি মনোনয়ের কথা বলা হয়। উক্ত পত্রের আলোকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত ০৫.৩০.৩৫৩২.০০২.০৬.০০৫.১৭-৩০৮/১(৪) নং স্বারকে পবিত্র মজুমদার কে অভিবাবক প্রতিনিধি ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত জেশিঅ/গোপাল/২০১৮/১৬৮(৫) স্বারকে ভুপতি রঞ্জন দাস কে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসাবে মনোনীত করে এবং প্রধান শিক্ষকে এডহক কমিটির সভাপতি নির্বাচন করার কথা বলা হয়।
প্রধান শিক্ষক কতৃক সভাপতির মনোনয়নকৃত চিঠি বোর্ডে না যাওয়ার আগেই মো: মাহমুদ আলম নামে জনৈক ব্যাক্তি প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর, সীল ও বিদ্যালয়ের প্যাড জাল করে এবং অভিবাবক প্রতিনিধি, শিক্ষক প্রতিনিধি মনোনয়নের চিঠি ভুয়া স্বারকের কপি তৈরী করে শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট শাখার ডিলিং এসিস্ট্যান্ড এর সাথে লক্ষাধিক টাকার অবৈধ লেন-দেনের মাধ্যমে সম্পুর্ন অনৈতিক পন্থায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে নিজের নামে সভাপতি মনোনয়ন ও একটি এডহক কমিটি করিয়ে আনে। যাহা সম্পুর্ন ভুয়া ও মিথ্যা বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
উক্ত ভুয়া কমিটির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে বৌলতলী সাহাপুর সম্মিলনী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম বিষয়টি জানিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড ঢাকার চেয়ারম্যান বরাবরে আরো একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
এ ব্যাপারে বৌলতলী সাহাপুর সম্মিলনী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মো: মাহমুদ আলম একজন সুচতুর ব্যাক্তি তিনি জাল জালিয়াতির এবং লক্ষাধিক টাকার বিনিময়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড ঢাকার থেকে একটি ভুয়া এডহক কমিটি করিয়ে আনেন যাহা আদৌও কার্যকরি না।
তিনি আরো বলেন, সভাপতি ব্যাতিত অভিবাবক প্রতিনিধি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কতৃক মনোনীত ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কতৃক মনোনীত শিক্ষক প্রতিনিধি মনোনয়ের কথা বলা হয়। উক্ত পত্রের আলোকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত ০৫. ৩০. ৩৫৩২. ০০২. ০৬. ০০৫. ১৭-৩০৮/১ (৪) নং স্বারকে পবিত্র মজুমদার কে অভিবাবক প্রতিনিধি ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত জেশিঅ/গোপাল/২০১৮/১৬৮(৫) স্বারকে ভুপতি রঞ্জন দাস কে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসাবে মনোনীত করেন। অথচ মো: মাহমুদ আলম বোর্ডে যে সকল চিঠির কথা উল্লেখ করেছেন তার স্বারক নম্বরই ভুল। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত ০৫. ৩০. ৩৫৩২. ০০২. ০৬. ০০৫. ১৭-৩০৮/১ (৪) নং স্বারক কে ০৫. ৩০. ৩৫৩২. ০০২. ০৬.০০৫. ১৭-৩০৮ নং স্বারক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত জেশিঅ/গোপাল/ ২০১৮/ ১৬৮ (৫) স্বারকে জেশিঅ/গোপাল/২০১৮/১০৬৮ নং স্বারক উল্লেখ করেছেন যাহা সম্পুর্ন মিথ্যা। মাহমুদ আলম বর্তমানে ওই ভুয়া এডহক কমিটির সভাপতি পরিচয়ে বিদ্যালয়ে এসে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত করছেন। ওই ভুয়া এডহক কমিটির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যাপারে এডহক কমিটির সভাপতি পরিচয় দানকারী মো: মাহমুদ আলমের ব্যবহৃত মোবাইল ০১৭১১-৩৯৭৯০৯ নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ কমিটির ব্যাপারে আমার কোন ক্ষমতা নেই। যা যা করার ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক করেছে। আমি এ ব্যাপারে কিছুই করিনি। আমি বোর্ডের চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে কথা বলেছি তিনি আমাকে বলেছেন সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। স্বারক নম্বর ভুলের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন আমার ইউএনও অফিসে গিয়ে দেখতে হবে। আমি চিঠি দেখে জানাতে পারবো। এ সময় তিনি আরো বলেন আমার ভাইও সাংবাদিক সে এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজে ঢাকায় আছেন।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here