গোপালগঞ্জের বিলে বিলে ভাসছে পলিথিনের নাও : এক দারুণ উদ্ভাবণ

0
363

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের বিলে বিলে এখন ভাসছে এখন ধান বোঝাই পলিথিনের নাও। ধান কেটে তাৎক্ষণিক ভাবে রাখতে ও বহন করে গন্তব্যে নিয়ে যেতে এ যেন এক দারুণ উদ্ভাবণ। অতি বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া জমি থেকে এ ভাবেই বোরো ফসল ঘরে তুলছে চরম দুর্ভোগে পড়া গোপালগঞ্জ জেলার কৃষকরা। পাকা ধান কাটার পর জমি থেকে পরিবহনের জন্য স্বল্প খরচে পলিথিনের নাওই এখন কৃষকের একমাত্র ভরসা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি এক হয়ে বিলের পাকা ধান তলিয়ে গেছে। ফলে এসব ধানে পচন ধরেছে। আবার ধানে অঙ্কুরোদ্গমও হতে শুরু করেছে। ফলে কি ভাবে এসব ধান দ্রুত কেটে বাড়িতে নিয়ে আসা যায় সে চিন্তায় ঘুম হারাম হয়ে গেছে কৃষকদের।
পানির নিচেয় তলিয়ে যাওয়া এসব জমির পাকা ধান কেটে পলিথিনের নৌকায় করে হাঁটু পানিতে ভাসিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন কৃষকেরা। এই পদ্ধতিতে ধান ভিজে যাওয়া থেকে রক্ষা পাচ্ছে। মাথায় করে না এনে সহজে পরিবহন করা যাচ্ছে। ধান বাঁচাতে এটাই তাদের কাছে একমাত্র সহজ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। আবার একসঙ্গে অনেক ধানও পরিবহন করা যাচ্ছে। একটি ১৪/১৫ হাত লম্বা পলিথিনের নৌকায় এক বিঘা জমির ধান এক সঙ্গে আনা সম্ভব।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাতপাড়া ইউনিয়নের চামটা গ্রামের কৃষক আলী হোসেন মিয়া বলেন, বাজার থেকে পলিথিন কিনে তার মধ্যে বাতাস ঢুকিয়ে দুই মুখ বেঁধে দিই। এতে নৌকার মতো তৈরি হয়। পরে ধান কেটে কেটে সেখানে রাখি। পরে পানির মধ্য দিয়ে দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে আসি। আর এমনই দৃশ্যই এখন চোখে পড়ছে গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া, মুকসুদপুর, কাশিয়ানী ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বিলে বিলে।
কাশিয়ানী উপজেলার সিংগা গ্রামের কৃষক বৈদ্য নাথ বিশ্বাস বলেন, বৃষ্টির থেকে বেশি ক্ষতি করেছে জোয়ারের পানি। ফসল ভালোই হয়েছিল কিন্তু সে ফসল আমরা ঠিক মতো ঘরে তুলতে পারলাম না। কি ভাবে সারাটা বছর খেয়ে পড়ে বাঁচবো তা ভেবে পাচ্ছিনা। ছেলে মেয়ে লেখাপড়া করে। কি ভাবেই বা তাদের পড়ালেখার খরচ চালাবো।
কৃষকদের সঙ্গে একই সুর মেলালেন কৃষি কর্মকর্তারাও। গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা হরলাল মধু বললেন, পলিথিনের নৌকায় কাটা ধান পরিবহনের জন্য ভালো। ধান ভেজেনা। যেখানে অল্প পানিতে কাঠের নৌকা ও পায়ে হেঁটে চলাচল করতে সমস্যা হয়। সেখানে পলিথিনের নৌকা ব্যবহার করে কৃষকদের কাটা ধান পরিবহন করতে সুবিধা হচ্ছে। এটা কৃষকদের একটা ভাল উদ্ভাবণ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here