গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে রাতের বেলা বাড়ি ও দোকানে আগুন : বলা হচ্ছে জিনের কান্ড

0
232

এম শিমুল খান, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি  : গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে গত এক মাসে একাধিক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। রাতের বেলা একের পর এক বাড়ি ও দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে এসব ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। গ্রামে পাহারা বসিয়েও দুষ্কৃতকারীদের ধরা সম্ভব হয়নি।
অভিযোগ উঠেছে, এসব কর্মকান্ড জিনের মাধ্যমে হচ্ছে, এমনটি দাবি করে কৌশলে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করতে চাচ্ছে একটি মহল। পুলিশ বলছে, বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত এক মাসে শংকরপাশা গ্রামে দু’টি দোকানসহ ৬টি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় রাতের বেলা। যাদের দোকান ও ঘর পোড়ানো হয়েছে তারা হলেন, শাবু মুন্সীর ঘর, হাসান মুন্সীর দোকান, লিটন মুন্সীর দোকান, আনোয়ার শেখের ঘর এবং মনিরুজ্জামান শেখের ঘর।
আনোয়ার শেখ জানান, তার বাড়িতে এক রাতেই তিনবার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। সন্ধ্যায়, রাত সাড়ে ৯টার দিকে এবং ভোর রাতের দিকে। কারা এবং কেন এসব ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্তরা নিজেরাও তা বলতে পারছেন না। তাদের দাবি, তাদের সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা নেই।
বর্তমানে ওই এলাকাবাসীর রাত কাটছে শঙ্কার মধ্যে। রাতের বেলায় ঘুমাতে পারছেন না কেউ। কখন কার বাড়িতে আগুন লেগে যায় এই ভয়ে প্রতিটি রাত কাটছে এলাকাবাসীর চরম  আতংকে  ।এঅবস্থা থেকে বাঁচতে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী।
পুড়ে যাওয়া দোকান মালিক লিটন শেখ বলেন, আমাদের এলাকাটি আগে শান্ত ও সুশৃঙ্খল ছিল। হঠাৎ করে একদিন আমার দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আমার পাশের দোকানদার হাসান মুন্সীর দোকানও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে আমার প্রায় আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরপর গ্রামবাসী সিদ্ধান্ত নেয় সবাই মিলে এই অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু কিছুই হয়নি। এরপরেও বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামের কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক এসব বিশৃঙ্খলা ঘটাচ্ছে বলে আমাদের ধারণা। বর্তমানে আমরা সব সময়ই বিপদের আশঙ্কায় থাকি।
ওই গ্রামের আনোয়ার শেখের স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, ৫ জানুয়ারি রাতে হঠাৎ করে আমার ঘরে আগুন লাগে। কে বা কারা আগুন ধরিয়েছে আমরা দেখিনি। আমাদের বাড়িতে এদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত তিনবার আগুন লাগানো হয়। এলাকায় আমাদের কোন শত্রু নাই। কেন যে আমার ঘরটি পোড়ালো তা বুঝে উঠতে পারছি না। এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের সাজা হোক এটাই আমার দাবি।
শংকরপাশা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ মিলন শেখের স্ত্রী ফরিদা বেগম বলেন, রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি। রাতে আমরা ঘুমাতে পারি না। আমরা এর একটা সুষ্ঠ সমাধান চাই।
ক্ষতিগ্রস্থ শাবু মুন্সী বলেন, রাতের আঁধারে আমার গোয়াল ঘরে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে মসজিদের মাইকে লোকজন ডাকা হয়। এলাকাবাসী পানি দিয়ে আগুন নেভায়। এরপর থেকে আমরা আতংকে আছি। রাতে ঠিক মতো ঘুমও হয় না।
এলাকার বাসিন্দা ও রাতইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আঞ্জুরুল ইসলাম আঞ্জু বলেন, প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করার জন্য জিনের কান্ড বলে চালানো হচ্ছে। যারা এসব করছে তারা হয়তো অন্য কোনও বড় ধরনের অপরাধ করছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুকসুদপুর সার্কেল) হুসাইন মোহাম্মদ রায়হান জানান, ক্ষতিগ্রস্থরা অভিযোগ দায়ের না করলেও আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। দোষীরা যেই হোক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here