গুম-খুনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের বিচার একদিন হবেই: ফখরুল

0
570
গুম-খুনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের বিচার একদিন হবেই: ফখরুল

খবর৭১ঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গুম-খুনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার একদিন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হবে। এনফোর্স ডিজএপিয়ারেন্স- এটা সম্পূর্ণরূপে মানবতাবিরোধী একটা অপরাধ।

মির্জা ফখরুলবলেন, জাতিসংঘের যে একটা চার্টার্ড আছে তাতে পরিষ্কার করা হয়েছে- দিস ইজ এ ক্রাইম এগেনেস্ট হিউমেনিটি। আজকে এই সরকার অভিযুক্ত হবে এই ক্রাইম এগেনেস্ট হিউমেনিটির জন্য। আমরা বিশ্বাস করি, একদিন না একদিন এই অপরাধের বিচার হবেই।

শুক্রবার বিকালে বনানীতে নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর (সাবেক সংসদ সদস্য) পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বিএনপি মহাসচিব এ সব কথা বলেন।

আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবসে ঢাকায় গুম হওয়া দলের অন্তত ২০ নেতাকর্মীর পরিবারের খোঁজ-খবর নেন বিএনপি নেতারা। এ সময় তারা গুম হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবারের জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফলের ঝুড়ি নিয়ে যান।

নিখোঁজ ব্যক্তিরা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে আসবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে ইলিয়াস আলীর বাসায় এসেছি তার ছোট মেয়ে আমাদের সামনে আসেনি। আসেনি এ জন্য সে কষ্ট পায়। আমার মনে আছে ৬ বছর আগে যখন এখানে আসি আপনারা সবাই দেখেছেন ফুটফুটে একটা বাচ্চা মেয়ে প্রতিদিন বাবার জন অপেক্ষা করত। আমরা তাদের পাশে আছি। আমরা আশা করব, ভবিষ্যতে এর একটা সুষ্ঠু বিচার হবে।

২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্য রাতে মহাখালীর সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সামনে থেকে নিখোঁজ হওয়া ইলিয়াস আলীর বাসায় যান বিএনপি মহাসচিব। তিনি ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী ও তার বড় ছেলে আবরার ইলিয়াসের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‌‌‌আমি ইলিয়াস আলীর বাসাসহ চারটি বাসায় গিয়েছি। আমাদের অন্য নেতারা ঢাকা শহরে যারা আছেন তাদের বাসায় গিয়েছেন। গুম হওয়া পরিবারের সঙ্গে আমরা সব সময় যোগাযোগ রাখি। চেষ্টা করি তাদের পাশে দাঁড়ানোর। তাদের কষ্ট আমরা ভাগ করে নিতে পারি না, কিন্তু তাদের কষ্টটা আমরা অনুভব করি।’

গুম হওয়া পরিবারের অসহায় অবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কিছুক্ষণ আগে দক্ষিণখানে গিয়েছিলাম ছাত্রনেতা তারিকুল ইসলাম ঝন্টুর বাসায়। তার মা বলছিলেন, আমার এই ছেলেটা ছিল সবচেয়ে ভালো ছেলে, অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিল। মা বলছিলেন যে, তাকে সালাম না করে কোনোদিন ঘুমোতে যেত না। সেই ছেলে গুম হয়ে গেছে। কিছুদিন পরে ছেলের বাবা অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। তাদের তৃতীয় সন্তান দুর্ঘটনায় পা ভেঙে গেছে- এই পরিবারটি অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় আছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, নিজামুদ্দিন মুন্নার বাসায় গিয়েছিলাম। অনেক কষ্ট করে এই ছেলেটি বিএ পাস করেছিল। তার বাবা এমন কোনো জায়গা নেই যাননি, ভারতেও গিয়েছিলেন। বহু জায়গায় গিয়ে ছেলেকে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত অসুখ হয়ে মারা গেছেন।

ইলিয়াস আলী, নিজামুদ্দিন মুন্না ও তারিকুল ইসলাম ঝন্টুর বাসা ছাড়াও নাখালপাড়ায় সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায়ও যান মির্জা ফখরুল। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, শহিদুল ইসলাম বাবুল, ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন প্রমুখ তার সঙ্গে ছিলেন।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বংশালে মো. সোহেল, জহিরুল ইসলাম জহির, পারভেজ হোসেন, মো. চঞ্চলের বাসায় যান।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় সূত্রাপুরের খালিদ হোসেন সোহেল, সেলিম রেজা পিন্টু, সম্রাট মোল্লার বাসায় গিয়ে তাদের পরিবারের খোঁজ-খবর নেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী, ইশরাক হোসেন প্রমুখ। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য অপরাধের মধ্যে গুম নিকৃষ্টতম কাজ। যা এই অবৈধ সরকার করেছে। তিনি বলেন, বিএনপিও যদি জনগণের সমর্থনে সরকার গঠন করতে পারে তাহলে গুমের সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই বিচার হবে।

এ ছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান সবুজবাগে মাহবুব হাসান সুজন ও কাজী ফরহাদ হোসেনের বাসায় গিয়ে তাদের পরিবারের খোঁজ-খবর নেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here