গাইবান্ধা জেলাকে লকডাউন ঘোষণা

0
438
গাইবান্ধা জেলাকে লকডাউন ঘোষণা

সুদীপ্ত শামীমঃ
করোনাভাইরাসে ৮ জন শনাক্তের পর মরণব্যাধী এই রোগের বিস্তাররোধে অবশেষে গাইবান্ধা জেলাকে লকডাউন বা অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গাইবান্ধা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভাপতি এবং গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আবদুল মতিন বলেন, গাইবান্ধাকে লকডাউন বা অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যা আজ শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে কার্যকর হবে। ফলে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত গাইবান্ধা থেকে কেউ অন্য কোন জেলায় গমন করতে পারবেন না এবং জেলার অভ্যন্তরে আন্তঃউপজেলা যাতায়াতের ক্ষেত্রেও একইরুপ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সভা সুত্রে জানা যায়, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রামক ঝুঁকি মোকাবেলায় গাইবান্ধা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটি সভা গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত ও গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. এ বি এম আবু হানিফের সুপারিশক্রমে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনাক্রমে এবং সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ (২০১৮ সনের ৬১ নং আইন) এর ১১ (১)(২)(৩) ধারা মোতাবেক গাইবান্ধা জেলাকে অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

ফলে এ জেলা হতে কেউ অন্য কোন জেলায় গমন করতে পারবেন না এবং জেলার অভ্যন্তরে আন্তঃউপজেলা যাতায়াতের ক্ষেত্রেও একইরুপ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। সকল ধরনের গণপরিবহন, জনসমাগম পূর্বের ন্যায় বন্ধ থাকবে। তবে জরুরী পরিসেবা যেমন চিকিৎসা, খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ ও সংগ্রহ ইত্যাদি এর আওতা বহির্ভুত থাকবে। জনসাধারণের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণে ইতোপূর্বে জারিকৃত সকল আদেশ বলবৎ থাকবে।

জনস্বার্থে জারিকৃত এই আদেশ আজ ১০ এপ্রিল বিকেল ৫টা হতে কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে। আদেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

গাইবান্ধায় করোনাভাইরাসের সংক্রমন দেখা দেয় গত ২২ মার্চ। সেদিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী দুইজন মা ও ছেলে শনাক্ত হন মরণব্যাধি এই ভাইরাসে। পরে তাদের দুজনের থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে আরও তিনজনের শরীরে। এই তিনজনের মধ্যে দুইজনকে শনাক্ত করা হয় ২৭ মার্চ ও আরেকজনকে শনাক্ত করা হয় ৪ এপ্রিল। সর্বশেষ ৯ এপ্রিল আরও করোনায় আক্রান্ত তিনজনের তথ্য জানায় ঢাকায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। সবমিলে গাইবান্ধায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ জনে।

গাইবান্ধায় তিন উপজেলার ৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের পর থেকেই গাইবান্ধাকে লকডাউনের দাবি জানিয়ে আসছিল গাইবান্ধাবাসী। এরপর আজ শুক্রবার গাইবান্ধাকে লকডাউন বা অবরুদ্ধ ঘোষণা দেয়া হলো।

গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. এ বি এম আবু হানিফ বলেন, আমাদের হিসেবে এখনো ৫ জন আছে। তবে ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) বৃহস্পতিবার আরও নতুন যে তিনজন আক্রান্তের কথা বলছে, সেই তিনজন হতে পারেন অন্য কোন জেলায় বসবাসরত গাইবান্ধার বাসিন্দা। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।

ডা. এ বি এম আবু হানিফ আরও বলেন, আক্রান্ত ৫ জনের মধ্যে চারজনকে গাইবান্ধার সরকারি দুইটি হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে এবং আরেকজনকে আইইডিসিআরের পরামর্শক্রমে বাড়ীতে আইসোলেশনে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। এই ৫ জনের মধ্যে একজনের বিষয়ে খুব শীঘ্রই সুখবর আসছে বলেও জানান সিভিল সার্জন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here