গর্ভবতী নারীরা কেন বাম কাতে ঘুমাবেন

0
305

খবর৭১ঃঅনেক চিকিৎসক গর্ভবতী নারীদের বাম পাশ ফিরে ঘুমাতে পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু কেন? ডানপাশে কাত হয়ে ঘুমালে কিংবা চিৎ হয়ে ঘুমালে সমস্যা কোথায়?

কেন বাম কাতে ঘুমাবেন?

গর্ভবতী নারীদের বাম কাত হয়ে ঘুমানোর মেডিক্যাল কারণ আবিষ্কার হয়েছে। যেহেতু গর্ভকালে ভ্রুণ দিনদিন বড় হতে থাকে, তাই এটি স্বাভাবিকভাবেই তার মায়ের অভ্যন্তরীণ অর্গান ও রক্তনালীতে বেশি থেকে বেশি চাপ ফেলে। বিকাশমান শিশু যখন মায়ের ব্লাডারে চাপড় মারে অথবা অন্ত্রে লাথি মারে, তখন গর্ভবতী নারী ব্যথা অনুভব করতে পারে। কিন্তু এই ধরনের অভিজ্ঞতা থেকে আপনাকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে বাম পাশ ফিরে ঘুমানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে না।

জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের ওষুধ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. গ্রেস পিয়েন বলেন, ‘মায়ের একটি বড় শিরা হচ্ছে ইনফেরিয়র ভিনা কাভা (আইভিসি), যা মেরুদণ্ডের ডানপাশ বরাবর গেছে এবং এটি শরীরের নিচের অংশ থেকে হৃদপিণ্ডে পুনরায় রক্ত বহনে অবদান রাখে।’

পিয়েন লাইভ সায়েন্সকে বলেন, ‘যদি গর্ভবতী নারী পিঠে ভর দিয়ে বা চিৎ হয়ে ঘুমায়, তাহলে ইনফেরিয়র ভিনা কাভায় ভ্রুণের চাপ পড়ার সম্ভাবনা বেশি, এর ফলে হৃদপিণ্ডের দিকে পুনরায় ফিরে যাওয়া রক্তের পরিমাণ হ্রাস পাবে।’

তিনি যোগ করেন, ‘বাম পাশ ও ডান পাশে কাত হয়ে ঘুমানো নিয়ে অনেক তুলনামূলক গবেষণা হয়েছে এবং এটা প্রমাণ হয়েছে যে বাম পাশে কাত হয়ে ঘুমালে ডান পাশে কাত হয়ে ঘুমানোর চেয়ে চাপ পড়ার সম্ভাবনা কম।’

কেন এই চাপ ভালো নয়?

হৃদপিণ্ডে কম রক্ত প্রবেশ করার মানে হচ্ছে হৃদপিণ্ড থেকে কম রক্ত বের হওয়া, এর ফলে মায়ের রক্তচাপ কমে যায় এবং মা ও শিশু উভয়ের জন্য রক্তে অক্সিজেন কনটেন্টের পরিমাণ হ্রাস পায় (মায়ের রক্ত শিশুকে অক্সিজেন সরবরাহ করে)।

পিয়েন বলেন, ‘অধিকাংশ সুস্থ গর্ভবতী নারী ও তাদের ভ্রুণ কার্ডিয়াক আউটপুট সামান্য হ্রাসের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে পারে, কিন্তু আইভিসি চাপ সেসব গর্ভবতী নারীদের জন্য বড় ঝুঁকি হতে পারে যাদের ইতোমধ্যে রক্তচাপের সমস্যা অথবা শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত জটিলতা আছে।’

২০১৭ সালে পিএলওএস ওয়ানে প্রকাশিত অন্য একটি গবেষণায় পাওয়া যায়, পিঠে ভর দিয়ে বা চিৎ হয়ে হয়ে ঘুমালে মৃত বাচ্চা প্রসব করার সম্ভাবনা স্বাভাবিকের তুলনায় ৩.৭ গুণ বেশি। চিৎ হয়ে ঘুমানোর সঙ্গে উচ্চ ঝুঁকি জড়িত থাকার কারণে চিকিৎসকরা গর্ভবতী নারীদের পিঠে ভর দিয়ে না ঘুমাতে পরামর্শ দিতে দ্বিধা করেন না।

যদি আপনার সুস্থ প্রেগন্যান্সি থাকে এবং বাম পাশে কাত হয়ে ঘুমাতে না পারেন, না হলে ডানপাশে কাত হয়ে ঘুমানো সম্ভবত দুশ্চিন্তার কিছু নয়।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here