খবর৭১ঃ সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যা প্রসঙ্গে গত রবিবার ইস্তাম্বুলে এক সমাবেশে দেয়া বক্তব্যে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছিলেন, ‘আমরা সুবিচার খুঁজছি। খাশোগি হত্যায় যেনতেন পদক্ষেপ নয়, নগ্নসত্য প্রকাশে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেয়া হবে। আমরা চূড়ান্ত সত্য খুঁজে বের করবোই।’
সেই বক্তব্যের দু’দিনের মাথায় আবারও সৌদি আরবের খ্যাতনামা সাংবাদিক খাশোগি হত্যা নিয়ে মুখ খুললেন এরগোয়ান। জানালেন, খাশোগিকে হত্যার পরিকল্পনা বেশ কয়েকদিন আগেই করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) তুর্কি পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যদের তিনি এ কথা বলেন।
একইসঙ্গে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে ২ অক্টোবরে খাশোগিকে যে পূর্বপরিকল্পিত এবং নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল তার শক্ত প্রমাণ আছে বলে পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে এরদোয়ান দাবি করেন। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার যেন ইস্তাম্বুলেই করা হয় সে দাবিও তুলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
খাশোগি হত্যার পূর্বপরিকল্পনার নমুনা তুলে ধরে এরদোয়ান জানান, সৌদি চরদের একটি দল খাশোগি আসার আগের দিনই তুরস্কে এসেছিল এবং কনস্যুলেটের ক্যামেরাও সরিয়ে ফেলেছিল। যেন ভিডিওতে কিছু ধরা না পড়ে।’
এরদোয়ান জানান, খাশোগি হত্যার দিন অন্তত ১৫ সৌদি কনস্যুলেটে ঢুকেছিল। যারা আগের কয়েকদিনে তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে আলাদা বিমানে ইস্তাম্বুলে পৌঁছায়। হত্যায় জড়িত দলটির ৩ সদস্য ইস্তাম্বুলের বেলগ্রাদ ও ইয়ালোভা বনেও অন্বেষণে গিয়েছিল।’
এদিকে সাংবাদিক খাশোগি হত্যার ঘটনায় ইতোমধ্যে সৌদি আরবে ১৮ জনকে গ্রেফতার হয়েছে বলে এরদোয়ান জানিয়েছেন।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কট্টর সমালোচক ছিলেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। আমেরিকায় স্বেচ্ছা-নির্বাসনে থাকা প্রথিতযশা এই সাংবাদিক তার তুরস্কে থাকা বান্ধবীকে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গত ২ অক্টোবর (মঙ্গলবার) তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের সৌদি কনস্যুলেটে যান। কিন্তু সেখান থেকে তিনি আর ফিরে আসেননি। কনস্যুলেটে প্রবেশের পর খাশোগিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছিলো।
এরইমধ্যে ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনস্যুলেটের ভেতরে সাংবাদিক জামাল খাশোগি খুন হয়ে থাকলে সৌদি আরবকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
উল্লেখ্য, সৌদি যুবরাজ সালমানের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে খাশোগি শূল নজরে পড়েন। এক পর্যায়ে তিনি দেশ ছেড়ে স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে থেকে সালমানের কুকীর্তি নিয়ে ওয়াশিংট পোস্টে একের পর এক কলাম লিখতে থাকেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি।
খবর৭১/এসঃ