খবর৭১: বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ এবং এতটাই অসুস্থ যে পরিবারের সদস্যদের সাথে কারা কার্যালয়ে পর্যন্ত এসে দেখা করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ‘আমরা (বিএনপি) গত কয়েক দিন ধরে বেগম খালেদা জিয়ার অবনতিশীল স্বাস্থ্যের বিষয়ে অবহিত করেছি। আজ বিকেলে দেশনেত্রীর পরিবারের সদস্যরা তাঁর সাথে কারাগারে দেখা করতে গেলে বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ থাকার কারণে তাদের সাথে কারা কার্যালয়ে দেখা করতে পারেননি। আমরা দেশনেত্রীর অসুস্থতার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও গড়িমসি নিয়েও বারবার গণমাধ্যমের মাধ্যমে অবহিত করেছি। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সাড়া দেয়নি। বরং কারা কর্তৃপক্ষ দেশনেত্রীকে নিয়ে সরকারের অশুভ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।’
শুক্রবার (২০ এপ্রিল) রাতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার স্বজনরা আজ কারাগারে তাঁর সাথে সাক্ষাত করতে গেলে তাঁর পা, হাঁটুসহ সারা শরীরে ব্যথা এতটাই তীব্র হয়েছে যে, তিনি তাঁর জেল কক্ষ থেকে ওয়েটিং রুম পর্যন্তও আসতে পারেননি। আজ বিকেল সোয়া ৪টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর কারা কর্তৃপক্ষের লোকেরা পরিবারের লোকজনদের জানায় যে, বেগম জিয়া অসুস্থতার কারণে দেখা করতে পারবেন না। সুতরাং কারা কর্তৃপক্ষও স্বীকার করলো যে, বেগম জিয়া অসুস্থ।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও সরকারের সংকীর্ণ নীতির অংশীদার জেল কর্তৃপক্ষ ব্যক্তিগত চিকিৎসকদেরকেও কারাগারে শারীরিকভাবে অসুস্থ দেশনেত্রীর সাথে দেখা করার অনুমতি দিচ্ছে না। এমনকি সরকারের নির্দেশিত মেডিকেল বোর্ডও বেগম জিয়াকে অর্থপেডিক বেড দেয়ার জন্য যে সুপারিশ করেছিল সেটিও কারা কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করেনি। এই ঘটনায় সরকার প্রধানের এক সর্বব্যাপী প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষের প্রতিফলন ফুটে উঠছে। অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করে স্বামীহারা, সন্তানহারা বর্ষিয়ান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নির্যাতন করা ক্ষমতাসীনদের নিচু রাজনৈতিক চরিত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। এদের মধ্যে কোনো মনুষ্যত্বই জেগে ওঠেনি।’
রিজভী আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ বলেই তিনি তাঁর নিকটজনদের সঙ্গে কারা কার্যালয়ের ওয়েটিং রুমে হেঁটে এসে দেখা করতে পারেননি। এই ঘটনা দেশের আপামর জনসাধারণকে ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন ও ব্যথিত করে তুলেছে। কেন ব্যক্তিগত চিকিৎসকদেরকে দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য দেখা করার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না? কেন দেশনেত্রীর পছন্দ মতো রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না? স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র নিয়ে যাবার পরও কোন অজ্ঞাত কারণে গতকাল বিএনপি উচ্চ পর্যায়ের তিনজন নেতাকে দেখা করতে দেয়া হয়নি? সব মিলিয়ে এক গভীর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের আভাস পাচ্ছি আমরা। সরকারের মদদে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের গড়িমসি, অবহেলা ও উপেক্ষার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
এসময় তিনি আবারও বিএনপির পক্ষ থেকে অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে তাঁর সুচিকিৎসার জন্য তাঁর পছন্দানুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করার জোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি ভাইস-চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, কৃষকদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক এসকে সাদী প্রমুখ।
খবর৭১/এস: