খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা নিয়ে হাইকোর্টের বিভক্ত আদেশ ফেরত

0
243

খবর ৭১ঃ

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা নিয়ে হাইকোর্টের বিভক্ত আদেশের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি না লেখায় সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে ফেরত পাঠিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

বুধবার এ বিষয়ে তৃতীয় বেঞ্চ গঠন না করে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

প্রধান বিচারপতির দফতর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার সংক্ষিপ্ত আদেশের অনুলিপি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠান হাইকোর্ট। ফলে নিয়ম অনুযায়ী বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে যাবে, প্রধান বিচারপতি এ বিষয়টি সমাধানের জন্য তৃতীয় একটি বেঞ্চ গঠন করে দেবেন। কিন্তু আদেশের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি না লেখায় বেঞ্চ না গঠন করে প্রধান বিচারপতি এটি ফেরত পাঠিয়েছেন।

মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা বাতিলে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলে বিভক্ত আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ খালেদা জিয়ার মনোনয়ন বাতিলে নির্বাচন কমিশনের আদেশ স্থগিত করে রুল জারি করেন। বেঞ্চের অপর বিচারপতি মো. ইকবাল কবির এ আদেশের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। আদেশের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, বেঞ্চের প্রিজাইডিং জজ খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু অপর বিচারপতি দ্বিমত পোষণ করেছেন।

তিনি বলেন, এখন নিয়মানুসারে আবেদনগুলো প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হবে। তিনি বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য অন্য বিচারপতির কাছে পাঠাবেন। তিনটি আসনে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

এরওআগে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চে সোমবার শুনানি হয়। খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও নওশাদ জমির।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী-দণ্ডিত ব্যক্তির ভোটে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। সম্প্রতি বিএনপির ৫ নেতা ভোটে অংশ নেবেন-উল্লেখ করে তাদের দণ্ড ও সাজা স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায়। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন বিএনপির এক নেতা। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি হাইকোর্টের একটি একক বেঞ্চ সাবিরা সুলতানা মুন্নী নামে এক প্রার্থীর সাজা ও দণ্ড স্থগিত করে তাকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আপিল বিভাগ ওই আদেশ স্থগিত করে দিয়েছেন।

অর্থাৎ আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী-দণ্ডিত ব্যক্তির নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। এর পরও দণ্ডিতদের নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হলে তা হবে সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ করায় খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয় ইসিতে। ইসি সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে খালেদা জিয়ার আপিল খারিজ করে সিদ্ধান্ত দেয়। এতে বলা হয়, উনি দণ্ডিত এ কারণে নির্বাচনে মনোনয়নপত্র গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই।

এ আইনজীবী বলেন, সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদ যদি ব্যাখ্যা করা হয়, তা হলে সেটি হল চূড়ান্ত আপিল নিষ্পত্তির পর। এখানে খালেদা জিয়ার আপিল উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। এখনও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। ফলে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা কোথায়। এ ছাড়া দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল বিচারাধীন থাকার পরও ভোটে অংশ নেয়ার নজির মহীউদ্দীন খান আলমগীরের ক্ষেত্রে রয়েছে। পরে হাইকোর্ট আদেশের জন্য দিন ধার্য করে দেন।

মঙ্গলবার আদেশের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন, খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, কায়সার কামাল, নওশাদ জমির, অ্যাডভোকেট ফারুক হোসেন ও একে এম এহসানুর রহমান প্রমুখ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

খালেদা জিয়া ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে তিন আসনের মনোনয়নপত্রই বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এর বিরুদ্ধে করা আপিল ৮ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করে ইসি। এই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে গত রোববার পৃথক তিনটি রিট করেন খালেদা জিয়া। দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here