খষে পড়ছে ঐতিহাসিক চুনাখোলা মসজিদের পোড়া মাটির কারুকাজ

0
320

হেদায়েত হোসাইন,বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
সংস্কারের অভাবে খষে পড়ছে বাগেরহাটের ঐতিহাসিক চুনা খোলা মসজিদের পোড়া মাটির কারুকাজ। প্রাচীন ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক মসজিদের শহর বাগেরহাট। আর এই শহরে খান জাহান আমলের আরো বেশ কয়েকটি মসজিদ রয়েছে। যা ইতিহাসের পাতায় স্থান পেয়েছে। প্রাচীন পুরাকৃর্তীর এই নির্দশন যদিও প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত তবু কেন যেন এর রক্ষনাবেক্ষন হচ্ছে না। তদারকির অভাবে আর অযতœ খষে পড়ছে পোড়া মাটির নয়নাভীরাম কারুকার্য্য খচিত প্রাচীন শৈল্পিকতা। প্রতিনিয়ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করছে স্থানী মুসল্লীরা। নামাজীদের পদচারনায় সরগম থাকলেও কর্তৃপক্ষে খেয়াল নাই ওই মজিদের দিকে। রক্ষনা-বেক্ষনের অভাবে হারাতে বসেছে তার যৌলুশ। একদিন হয়তো বিলুপ্তি হয়ে যাবে পীর আমলের এই ঐতিহাসিক নিদর্শন।
বিশ^ ঐতিহ্য ষাটগুম্বজ মসজিদের প্রধান ফটকের সামনেই ওই আমলে নির্মিত সিংগাইড় মসজিদ। ষাটগুম্বুজের কিলো খানেক অ-দুরে চুনাখোলা মসজিদ একই আমলে ওই সময় কার নির্মান এবং একটি প্র্রাচীন নিদর্শন, ইতিহাসের অন্যতমের মধ্যে এটিও। নিপুন কারুকার্য্য খচিত পোডা মাটির অলংকরণে মধ্যযুগীয় স্থাপত্য শৈলিতে নির্মিত মসজিদটি হযরত খান জাহান (রহ:)এর আমলের। বাগেরহাট ঐতিহ্যবাহী ষাটগুম্বজ মসজিদ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পশ্চিম-উত্তরে বিবি বেগুনী মসজিদ, এরও উত্তরে চুনা খোলা মসজিদ। সদর উপজেলার ষাটগুম্বুজ ইউনিয়নেরই গ্রাম চুনোখোলায় এ মসজিদটির অবস্থান। প্রাচীন ঐতিহ্যের এই চুনাখোলা মসজিদকে ১৯৭৫ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি হিসাবে ঘোষণা করে এবং প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর এটিকে সংরক্ষণের আওতায় নেয়। পরবর্তিতে ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো ঐতিহাসিক ষাটগম্বজ মসজিদসহ প্রাচীন ‘খলিফতাবাদ’ নগর(প্রতিনিধির শহর) এর প্রতিষ্ঠাতা ‘খান-উল-আযম উলুঘ খান-ই-জাহান’ নির্মিত প্রাচীন নগরীর অংশ হিসেবে এই মসজিদটিকে ‘বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসাবে তালিকাভূক্ত করে। বিবি বেগনী মসজিদের উত্তর দিকে অবস্থিত চুনাখোলা মসজিদটির চার পার্শে বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠ মাটির রাস্তা। বেশ খানিকটা দুরে বসতি, তবে নিশ্চয়ই এ মসজিদের আশেপাশে পূর্বে জনবসতি ছিল। স্থানীয় ভাবে প্রকাশ পায় যে,হযরত খানজাহান (রহ:) এর বসতভিটার পশ্চিমে যে পাহরা চৌকি ছিল তাকে কেন্দ্র করে এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। এক গম্বুজ বিশিষ্ট র্বগাকৃতির মসজিদটির বাইরের দিক দৈর্ঘ প্রয় ১২.৩০ মিটার এবং প্রসস্থ ৭.৬৯ মিটার। সুলতানী আমলের খানজাহানীয় কীর্তিটির এ মসজিদের তিন দিকে মোট ৫টি দরজা রয়েছে। পূর্বদিকে ১টি বড় (প্রধান) দরজাসহ ৩টি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ১টি করে ২টি মোট ৫টি দরজা রয়েছে। পূর্বদিকের বড় দরজাটির উচ্চতা ২.৬৯ মিটার ০.৭৫ মিটার প্রস্থ এবং ছোট ২টি দরজার উচ্চতা ২.১৫ মিটার এবং প্রস্থ ০.৯৫ মিটার। উত্তর-দক্ষিণ দিকের দরজা ২ টির উচ্চতা ২.৮০ মিটার এবং প্রস্থ ১.৫৪টিার করে। মসজিদের মধ্যে ১টি কেন্দ্রিয় মেহরাব ও ২টি ছোট মেহরাব রয়েছে। বড়টির উচ্চতা ২.১৫মিটার ও প্রস্থ ১.২৩মিটার। ছোট মেহরাব ২টির উচ্চতা ১.২৩মিটার প্রায় এবং প্রস্থ ০.৯২মিটার মেহেরাব গুলোর প্রত্যোকটিতে সু নিপুন কারুকার্য্য খচিত পোড়া মটির নক্সার অলঙ্করণ রয়েছে। অলঙ্করণের ক্ষেত্রে জালির কাজ, ফুল ও লতাপাতার খোদাই নক্সা যুক্ত বৃত্ত, বিষমকোণী চর্তুভুজ এবং প্রচলিত ঝুলন্ত মোটিফ স্থান পেয়েছে । বর্তমানে এ অলঙ্করণগুলি শুধু মিহরাবের কুলুঙ্গিতে, খিলানের উপরে এবং বাঁকানো র্কানিশে এ গুলি লক্ষ করা যায়। বর্গাকার এ মসজিদের উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিমভাবে ভেতরের দৈর্ঘ্য ৩ ইি এবং ব্যাসার্ধ নিচে ২৪.৬১মিটার । ৪টি খিলানের উপর এক গম্বুজ বিশিষ্ট এ প্রতœতত্ত্ব স্থাপত্যটির ছাদ থেকে মাটি পর্যন্ত উচ্চতা ৬.৯৪মিটার। ছাদ থেকে ৩.০৭ ফিট উচ্চতার গম্বুজটির ব্যাসার্ধ ২৮মিটার। সমতল ভূমি থেকে গম্বুজের উপর পর্যন্ত চুনাখোলা মসজিদের মোট উচ্চতা ১০.৩৪মিটার। মসজিদের দেওয়ারের পুরুত্ব ২.৩৫মিটার এবং বাইরের চার কোণের চারটি খান জাহানী রীতি অনুযায়ী গোলাকার ইটের থাম বা পিলার রয়েছে। চুনাখোল মসজিদে এখনও নিয়মিত নামাজ আদায় করা হয়। কতৃপক্ষ একটু সদয় হলে রক্ষা পাবে আদেও কৃষ্টি সংস্কৃতী অগামী প্রজন্ম জানতে পারবে প্রচীন ঐতিহ্য কে।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here