খবর পৌঁছাতে গিয়ে নিজেই খবর হলেন

0
602

খবর ৭১:প্রতিদিনের মতো আর সকালে বাজবে না কামাল হোসেনের সাইকেলের বেল। তিনি আর পত্রিকা দেবেন না। তার কাজটি হয়তো অন্য কেউ করবে। পাঠকের কাছে যিনি নিয়মিত সংবাদপত্র পৌঁছান তার মৃত্যুর সংবাদ পড়বেন পাঠকরা। প্রতিদিনের মতো পত্রিকা আনতে গিয়ে নরসিংদীতে ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারাণ পত্রিকা এজেন্ট নিজেই। তিনি নিজেই পত্রিকা বিলি করতেন।

নিহত কামাল হোসেন (৬০) পলাশের জিনারদী ইউনিয়নের তাঁরগাও এলাকার বাসিন্দা ও সংবাদপত্রের এজেন্ট।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভেলানগর ঢাকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় তার ব্যবহৃত সাইকেল ও কয়েক শত পত্রিকা মহাসড়কে ছড়িয়ে পড়ে রক্তে রঞ্জিত হয়।

নিহত কামাল হোসেন সাইকেলে করে ভেলানগর থেকে বিভিন্ন পত্রিকা নিয়ে পলাশ যাচ্ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী তার সহকর্মী ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৬ টায় ভেলানগর থেকে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা নিয়ে সাইকেলে করে কামাল হোসেন ‘নরসিংদী খবর’ নামের স্থানীয় একটি পত্রিকা নেয়ার জন্য ঢাকা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে যাচ্ছিলেন।

সেখানে যাওয়া মাত্রই পেছন দিক থেকে একটি ট্রাক তাকে চাপা দেয়। এ সময় তার সাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে কামাল হোসেনের শরীরকে টেনেহিঁচড়ে প্রায় ১০০ গজ দূরে নিয়ে যায়।

পাশাপাশি তার শরীরের বুকের নিচের অংশ থেকে হাঁটু পর্যন্ত আলাদা হয়ে পুরো মহাসড়কে পিষে যায়। আর রক্তে রঞ্জিত হয় তার প্রতিদিনের বাহন সাইকেল ও পত্রিকা। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

মহাসড়কে তেমন লোকজন না থাকায় ঘাতক ট্রাকটি আটকানো সম্ভব হয়নি। পরে স্থানীয় ও তার সহকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে পুলিশকে ও তার পরিবারের লোকজনদের খবর দেয়।

নিহতের সহকর্মী শরিয়ত উল্লাহ বলেন, ‘আমার কাছ থেকে পত্রিকা নিয়ে যাওয়ার ৩-৪ মিনিটের মধ্যেই কামাল ভাই দুর্ঘটনার শিকার হন। তিনি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি ভেলানগর থেকে পত্রিকা নিয়ে পলাশের পারুলিয়া বাজার, বিভিন্ন সরকারি দফতরসহ পলাশ সারকারখানা এলাকায় বিলি করত।’

নিহতের ছোট ছেলে সজীব মিয়া বলেন, ‘আব্বা পত্রিকার এজেন্ট ও পত্রিকা বিক্রির পাশাপাশি পলাশ সারকারখানায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কাজ করত। ভোর ৫টায় আমাদের ঘুমের মধ্যে রেখে আব্বা পত্রিকা আনতে গেল। আর এখন নিজেই চিরঘুমের মধ্যে চলে গেলেন।’

নরসিংদী সদর মডেল এসআই আল আমিন বলেন, ‘লাশের শরীরের যে অবস্থা তাতে সুরতহাল করা ছাড়া ময়নাতদন্ত করার কোনো অবস্থা নেই। আর পরিবারের লোকজনের আপত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারের লোকজনের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।

খবর ৭১/ এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here