ক্ষেতলাল হইতে মোলামগাড়ী রাস্তা চলাচলের অযোগ্য!

0
375

এম এম আতাউর রহমান (জীবন), জয়পুরহাট প্রতিনিধি:

বর্ষণ আর ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল-বগুড়া সড়কের প্রায় ১০ কিলোমিটার অংশের খোয়া ও পিচ উঠে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। খানাখন্দে ভরা সড়কটির বেশ কিছু অংশ ডুবে থাকছে বৃষ্টির পানিতে। সড়কটির দুই পাশের কোনো কোনো স্থানের মাটিও সরে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যানবাহনের চালক ও সাধারণ যাত্রীরা। জানা গেছে, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল ও কালাই উপজেলার একাংশের লক্ষাধিক মানুষের জয়পুরহাট-বগুড়ায় যোগাযোগের এই একমাত্র সড়কটি বর্ষা মৌসুমের আগেই ভাল ছিল। দূরত্ব কম হওয়ায় ক্ষেতলাল সদর, ইটাখোলা, কাজিপাড়া, চৌধুরীপাড়া, শাখারুঞ্জ এবং কালাইয়ের কুজাইল, করিমপুর, বামনগ্রাম ও মোলামগাড়ি এলাকার অন্তত লক্ষাধিক মানুষ এ সড়কে বগুড়া, জয়পুরহাট সহ অন্যান্য এলাকায় যাতায়াত করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ-এবার বর্ষা মৌসুম শুরুর পর বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের মহাস্থান সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাথর বোঝাই ৪৫-৫০ টনের ভারি ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে সড়কে। মহাস্থান সেতু অকেজো হওয়ার পর ক্ষেতলালের এই সড়কপথে শত শত গাড়ি চলাচল করায় জয়পুরহাট অংশের ১০ কিলোমিটার জুড়ে পিচ ও খোয়া উঠে গেছে। আবার অনেক জায়গায় দেবে গিয়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুবে গর্তগুলো যানবাহনের জন্য মরণ ফাঁদে পরিণত হয়। বিশেষ করে সড়কটির মোলামগাড়ি বাজারের প্রায় ৫০০ মিটার অংশের অবস্থা খুবই খারাপ। বাজারের পানি নিষ্কাশনের ড্রেন অকেজো থাকার পাশাপাশি দুই পাশের উঁচু স্থাপনার কারণে একটু বৃষ্টিতেই সড়কটি ডুবে যায়। আবার সড়কের বিভিন্ন জায়গা দেবে সৃষ্ট বড় গর্তগুলো পানিতে ডুবে গেলে সড়ক নয়, দেখতে জলাশয়ের মতো লাগে।স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেতলাল-বগুড়া সড়কের কারণে সড়কটির দুইপাশে গড়ে উঠেছে ইটাখোলা, মোলামগাড়ি, পিরব, জামুর, বুড়িগঞ্জ, নামুজা ও ধাপের হাটের মত বড় বড় ব্যবসা কেন্দ্র। এছাড়া বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে এই সড়কটির কারণেই। যাত্রীদের সুবিধার্থে বর্তমানে বগুড়া এবং জয়পুরহাট জেলায় যোগাযোগের জন্য দুই জেলার মোটর মালিক সমিতি পৃথকভাবে সড়কটিতে বাস সার্ভিসও চালু রেখেছেন দীর্ঘদিন থেকে। বগুড়ার সঙ্গে যোগাযোগে জেলার অন্য সড়কের চেয়ে এই পথে দূরত্ব এবং খরচ কম হওয়ায় যাত্রীদের চাপও বেশি এই সড়কে। বাসের পাশাপাশি প্রতিদিন সড়কটিতে চলাচল করছে শতাধিক সিএনজি ও অন্যান্য যানবাহন। মোলামগাড়ি বাজারের সিএনজি চালক ফজলুর রহমান জানান, সিএনজি নিয়ে প্রতিদিন সকালেএই পথে তিনি বগুড়া যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করতেন। কিন্তু সড়কটির বেহাল দশার কারণে এখন তিনি বগুড়া শহরে সিএনজির ভাড়া মারছেন। বাসচালক খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙা সড়কের কারণে বাসও প্রায় বিকল হচ্ছে। বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভেঙে যাচ্ছে’।মোলামগাড়ি বাজারের স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল ওহাব বলেন, ‘বগুড়ার মহাস্থান সেতু অকেজো হওয়ার পর তিনদিন শত শত ভারী যানবাহন এই সড়কে চলাচল করে। আর তখনই সড়কটি ভেঙে তছনছ হয়ে যায়। ভাঙা সড়কের কারণে মোলামগাড়ি বাজারে এখন আর চলাচল করা যাচ্ছে না। ইটাখোলা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে বগুড়া থেকে তিনি দোকানের মালামাল পরিবহণ করতেন এই সড়কে। কিন্তু চলাচল অযোগ্য হওয়ায় মিনি ট্রাক এই পথে যাতায়াত করতে চায় না। এতে বিকল্প পথে ভাড়া বেশি দিয়ে গত একমাস থেকে তিনি বগুড়া থেকে দোকানের মালামাল পরিবহণ করছেন।জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর সিদ্দীক বলেন, ‘সড়কটি সচল রাখার জন্য জরুরি ভিত্তিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ইট দিয়ে ভরাট করে চলাচল উপযোগী করার কাজ চলছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত মোলামগাড়ি বাজারে ড্রেন নির্মাণসহ পুরো সড়ক মেরামতকরতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়ামাত্র সড়ক মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here