ক্বওমী মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও বিনামূল্যে সরকারি বই পাবে –নকলায় কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী

0
220

শেরপুর থেকে আবু হানিফ : শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের এম.পি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সফল কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন- ক্বওমী মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মত ভবিষ্যতে বিনামূল্যে সরকারি বইসহ শিক্ষা উপকরণ পাবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শাখার সব শিক্ষার্থীদের বছর শুরুর প্রথম দিনে তথা শিক্ষা বর্ষের শুরুর দিনে বিনামূল্যে সরকারি বই দিয়ে বিশ্বে নজির গড়েছেন। অন্যান্য সব শিক্ষা ব্যবস্থার মত ক্বওমী শিক্ষা ব্যবস্থাকেও একটি নীতিমালায় আনা হচ্ছে। ক্বওমী মাদরাসার শিক্ষার্থীরাও এদেশের কোন না কোন মায়ের সন্তান। তারা সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা অত্যান্ত ধার্মিক। তাই তিনি ক্বওমী মাদরাসা শিক্ষা ও ক্বওমী শিক্ষার্থীদের প্রতি সু-নজর রাখছেন। ইতোমধ্যে ক্বওমী শিক্ষার জন্য সরকারের সহযোগিতায় ক্বওমী শিক্ষায় অভিজ্ঞ ও ক্বওমী শিক্ষকদের দিয়েই তাদের জন্য ক্বওমী শিক্ষা বোর্ড গঠন, কারিকুলাম ও সিলেবাস প্রণয়নের কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অন্যান্য সব শিক্ষার সঙ্গে ক্বওমী শিক্ষাকেও সরকারি সব সুযোগ-সুবিধার অন্তর্ভুক্ত করতে বদ্ধ পরিকর। অতএব, অদূর ভবিষ্যতে অন্যসব শিক্ষার্থীদের মতো ক্বওমী শিক্ষার্থীরাও বিনামূল্যে সরকারি বই পাবে এটাই স্বাভাবিক। ২৯ জুলাই রোববার উপজেলার টালকী ইউনিয়নের বিবিরচর রহমানিয়া ফাজিল মাদরাসা মাঠে দ্বিতীয় শ্রেণির সেরা বিশ শিক্ষার্থী এবং ক্বওমী, হাফেজিয়া ও নুরানী মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে সৌরবাতি বিতরণ অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, শিক্ষা বর্ষের প্রথম দিন তথা পহেলা জানুয়ারী বই দিবসে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে বই তুলে দেওয়া, অবৈতনিক নারী শিক্ষা, ছেলে মেয়েদের মধ্যে উপবৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করাসহ দ্রুত শিক্ষার হার বৃদ্ধির দৃষ্টান্ত স্থাপনে আওয়ামী লীগ সরকার এখন বিশ্ব দরবারে দ্রুত শিক্ষার উন্নয়নে মডেলে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনার আমলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্যসহ বিভিন্ন খাতে যে উন্নয়ন হয়েছে তা এদেশের অন্য কোন সরকারের পক্ষে সম্ভব হয়নি। আর এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষতার কারনে। মন্ত্রী বলেন, আরাকান সেনাদের নির্যাতন ও নিপীড়নের হাত থেকে বাচঁতে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আমাদের দেশে এসেছে। রোহিঙ্গা মোসলমানদের হত্যা, ধর্ষণ, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার খবরে মিয়ানমার সরকার ও তাদের সেনাদের নিয়ে বিশ্ব ব্যাপী সমালোচনা চলছে; পাশাপাশি মানবিক কারনে বিপুল সংখ্যক অসহায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের সামনে উদারতা ও মানবিকতায় বাংলাদেশ ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আর তাইতো রোহিঙ্গা ইস্যুতে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব ব্যাপী প্রশংসিত হয়েছেন। শেখ হাসিনা আজ বিশ্ব দরবারে মানবতার মাতা (মাদার আব হিউমেনিটি) হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন, এর জন্য প্রধান মন্ত্রী পেয়েছেন সম্মাননা পদক। এসময়, পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক জন কেনেডি জাম্বিল, উপজেলা চেয়ারম্যান এ.কে.এম মাহবুবুল আলম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব কুমার সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, নকলা পৌরসভার মেয়র হাফিজুর রহমান লিটন, শেরপুর খামার বাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আশরাফ উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক উপাধ্যক্ষ আলতাব আলী, দপ্তর সম্পাদক খলিলুর রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর, নকলা থানার ওসি খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম সোহেল, যুগ্ম আহবায়ক এফ.এম কামরুল আলম রঞ্জু ও রেজাউল করিম রিপনসহ উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা এবং ওয়ার্ড থেকে আগত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসের তথ্য মতে, মন্ত্রী দুইদিনের এই সফরে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার সব প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইবতেদায়ী মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির সেরা ২০ জন করে শিক্ষার্থীর মধ্যে এবং ক্বাওমী, হাফেজিয়া ও নুরানী মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে মোট ৪ হাজার ৬৮০টি সৌরবাতি বিতরণ করবেন। এরমধ্যে ১৪১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ হাজার ৮২০ জন ও ২০ টি ইবতেদায়ী মাদরাসার ৪০০ জন দ্বিতীয় শ্রেণির টপ টুয়েন্টি শিক্ষার্থীদের মাঝে এবং ক্বওমী, হাফেজিয়া ও নূরানীয়া মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য এক হাজার ৪৬০ টি। বিতরণের জন্য নির্ধারিত সৌরবাতি গুলোর মধ্যে গনপদ্দী ইউনিয়নের জন্য ৪৮০টি, নকলা ইউনিয়নের জন্য ৩২০টি, উরফা ইউনিয়নের জন্য ৪৬০টি, গৌড়দ্বার ইউনিয়নের জন্য ২০০টি, বানেশ্বরদী ইউনিয়নের জন্য ৪৬০টি, পাঠাকাটা ইউনিয়নের জন্য ৩৮০টি, টালকী ইউনিয়নের জন্য ৩৫০টি, অষ্টধর ইউনিয়নের জন্য ৩৫০টি, চন্দ্রকোণা ইউনিয়নের জন্য ৫৮০টি এবং পৌরসভার জন্য এক হাজার ১০০টি সৌরবাতি প্রাপ্যতা অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে। রোববার বিকাল সোয়া চারটায় বিবিরচর রহমানিয়া ফাজিল মাদরাসা মাঠে টালকী ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দকৃত ৩৫০ টি সৌরবাতি বিতরণের মাধ্যমে দুইদিন ব্যাপী সৌরবাতি বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিনে পৌরসভাসহ চারটি ইউনিয়নে ২ হাজার ৪৫০টি সৌরবাতি বিতরণ করা হয়। বাকি ৫ ইউনিয়নে ২ হাজার ২৩০ টি সৌরবাতি ৩০ জুলাই সোমবার দিনব্যাপী বিতরণ করা হবে বলে সূত্রে জানাগেছে।
খবর ৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here