কোন পন্যে ভ্যাট আছে, কোন পন্যে ভ্যাট নেই

0
412

খবর ৭১ঃ

২০১৮–১৯ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু পণ্যে ভ্যাট রয়েছে। আবার কিছু পণ্যে ভ্যাট নেই। এসি বা নন-এসি, যেকোনো রেস্তোরাঁয় খাবার খেলেই সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। এমনকি ফাস্ট ফুডের দোকানে গেলেও ভ্যাট দিতে হবে। অন্যদিকে জীবনধারণের জন্য যেকোনো মৌলিক খাদ্য উৎপাদন ও আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট নেই। পণ্যের মধ্যে আছে চাল, আটা, ময়দা, মাছ-মাংস, শাকসবজিসহ কৃষিজাত মৌলিক খাদ্য। একনজরে দেখা যাক, কোন পণ্যে ভ্যাট আছে আর কোন পণ্যে ভ্যাট নেই।

ভ্যাট আছে

রেস্তোরাঁ
এসি বা নন–এসি, যেকোনো রেস্তোরাঁয় খাবার খেলেই সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। এমনকি ফাস্ট ফুডের দোকানে গেলেও ভ্যাট দিতে হবে। আপনি যদি ২০০ টাকার খাবার খান, তবে আপনার বিল আসবে ২১৫ টাকা। এত দিন এসি রেস্তোরাঁয় ভ্যাট ১৫ শতাংশ, এখন তা কমে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হলো। তবে ফুটপাতের ‘ভাতের হোটেলে’ খেলে ভ্যাট দিতে হবে না। কেননা বেষ্টনী ও ফ্যানহীন রেস্তোরাঁয় খাবার খেলে ভ্যাট নেই।

অনলাইনে কেনাকাটা
এত দিন ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম কিংবা অনলাইনে কেনাকাটা করলে ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হতো। নতুন বাজেটে তা বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। এতে অনলাইনে কেনাকাটা করলে খরচ বাড়বে।

পোশাক
ব্র্যান্ড বা নন–ব্র্যান্ড, যেকোনো দোকান থেকে শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, সালোয়ার–কামিজসহ যেকোনো পোশাক কিনতে গেলে খরচ বাড়বে। আগে ভ্যাট ছিল ৫ শতাংশ। নতুন আইনে তা সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। বাড়তি খরচের কথা ভেবে ব্র্যান্ড দোকান বাদ দিয়ে পাড়া-মহল্লার দোকানে যাবেন, সেখানেও একই ভ্যাট হার।

আসবাবপত্র 
দেশি আসবাবপত্র কিনলে ভ্যাট বাড়বে। খাট, আলমারি, চেয়ার-টেবিলসহ আসবাবপত্র উৎপাদককে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। আবার শোরুম থেকে কেনার সময় ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। এত দিন ধরে আসবাবপত্র কেনার সময় ৪ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে এসেছেন ক্রেতারা।

বিনোদন
অ্যামিউজমেন্ট পার্ক ও থিম পার্কে ঘুরতে গেলে আপনাকে ভ্যাট দিতে হবে। এই ভ্যাট হার সাড়ে ৭ শতাংশ। রাজধানী ও এর আশপাশে বেশ কিছু অ্যামিউজমেন্ট পার্ক আছে। সেখানে প্রবেশ ও রাইডে চড়ার মাশুলের সঙ্গে এই ভ্যাটের টাকা কেটে রাখা হবে। সিনেমা দেখতে গেলে দিতে হবে ১০ শতাংশ ভ্যাট।

দরজির দোকান
দরজিপাড়ার দিকে নজর দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। দরজির দোকানও ভ্যাটের আওতায় এসেছে। দরজির দোকান থেকে কোনো সালোয়ার-কামিজ, শার্ট-প্যান্টসহ অন্য যেকোনো জামা বানালে মজুরির ওপর ১০ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। এতে খরচ বাড়বে। নারীদের জন্য কিছুটা দুঃসংবাদই বটে।

ভ্যাট নেই

মৌলিক খাদ্য
জীবনধারণের জন্য যেকোনো মৌলিক খাদ্য উৎপাদন ও আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট নেই। পণ্যের মধ্যে আছে চাল, আটা, ময়দা, মাছ-মাংস, শাকসবজিসহ কৃষিজাত মৌলিক খাদ্য। এর মানে হলো, কোনো মৌলিক খাদ্য কিনতে ভোক্তাকে কোনো ভ্যাট দিতে হবে না।

স্বাস্থ্যসেবা
সরকারি, বেসরকারি যেকোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিক থেকে স্বাস্থ্যসেবা নিতে গেলে আপনাকে ভ্যাট দিতে হবে না। এই স্বাস্থ্যসেবার তালিকায় আছে চিকিৎসকের ভিজিট, যেকোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা, কেবিন ভাড়া ইত্যাদি। এ ছাড়া জীবনরক্ষাকারী ওষুধ কেনায়ও ভ্যাট দিতে হবে না। ইনসুলিন, জন্মনিয়ন্ত্রণকারী ওষুধেও ভ্যাট নেই।

শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিনোদন
বই-খাতা, ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র কেনায় কোনো ভ্যাট নেই। ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ছাড়া কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউশন ফির ওপর ভ্যাট দিতে হবে না। আবার শিল্পকর্ম, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, রেডিও-টেলিভিশনে সম্প্রচারের ওপর ভ্যাট নেই। লাইব্রেরি, জাদুঘর, আর্ট গ্যালারি, চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রবেশমূল্যেও কোনো ভ্যাট নেই।

পরিবহন টিকিট
যাতায়াত করতে আপনি যদি বাস-ট্রেন, লঞ্চের টিকিট কেনেন, তাহলে কোনো ভ্যাট দিতে হবে না। তবে এসব টিকিট নন–এসি যাতায়াতের জন্য। এসি টিকিট কিনলে ভ্যাট দিতে হবে। এ ছাড়া বিমান ভাড়ার ওপরও কোনো ভ্যাট নেই। অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করলেও ভ্যাট নেই।

আর্থিক সেবা
আপনি যদি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখেন কিংবা সঞ্চয় করেন, তাহলে এই সেবার ওপর কোনো ভ্যাট নেওয়া হবে না। আগেও এসব সেবার ওপর কোনো ভ্যাট ছিল না। এ ছাড়া জীবনবিমা পলিসি নিলেও কোনো ভ্যাট দিতে হবে না। সব মিলিয়ে আর্থিক সেবার ওপর কোনো ভ্যাট রইল না।

ডাকসেবা
ডাকযোগে কোনো পণ্য বা দলিলাদি পাঠালে আপনার খরচ বাড়বে না। কুরিয়ার সার্ভিস ও এক্সপ্রেস মেইলের ক্ষেত্রে ভ্যাট বসবে। এর মানে ডাক বিভাগের সেবায় কোনো ভ্যাট লাগবে না। এ ছাড়া জনস্বার্থে প্রদত্ত সব দাতব্য ও বৈজ্ঞানিক সেবার ওপর ভ্যাট নেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here