কোটা সংস্কার আন্দোলন এক মাস স্থগিত

0
298

খবর ৭১:আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত কোটা সংস্কার আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। আজ সোমবার সচিবালয়ে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।

এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সচিবালয়ে সেতু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৈঠকে বসেন আন্দোলনকারীদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধিদল।

বৈঠক শেষে হাসান আল মামুন জানান, মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে কোটা সংস্কার করা হবে-এমন আশ্বাসে আপাতত আন্দোলন স্থগিত করছেন তাঁরা। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা শিক্ষার্থীদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং সরকারের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলেও তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানান আন্দোলনকারীদের এই আহ্বায়ক।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে ছিলেন – দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এস এম কামাল হোসেন এবং উপদপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের দলে ছিলেন হাসান আল মামুন, নিলয়, ফারুক, সোহেল, সন্ধান, উজ্জ্বল, তারেক, লিটন, ইমরান, নুর, ইলিয়াস, সুমন, সাথী, সাইদ, দীনা, আরজিনা, লুবণা, কানিজ, সুমন ও তিথি।

গতকাল রোববার বিকেল থেকে শুরু হওয়া কোটাবিরোধী এই আন্দোলনে রাতভর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশের লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস আর জলকামানে আহত হয় অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী। আটক করা হয় বেশ কয়েকজনকে। এ সময় ভাঙচুর করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন।

এ ঘটনার জের ধরে আজ সোমবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে কার্জন হলের সামনে আন্দোলনকারীরা ফের জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ তাঁদের ধাওয়া দেয়। এ সময় ১০-১৫টি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয় ছাত্রদের দিকে।

এরপর বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। মিছিলটি শাহবাগ মোড় প্রদক্ষিণ করে টিএসসি হয়ে কার্জন হলের ভেতরে প্রবেশ করে। পরে সেখান থেকে বের হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে মিছিলটি পলাশীর মোড়ের দিকে যায়।

এরপর ভাষাশহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘরের সামনে দিয়ে নীলক্ষেত মোড় হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা। পরে টিএসসি হয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি আবার বুয়েটের দিকে যায়।

এদিকে টিএসসিতে দেখা যায়, আরো একদল ছাত্রছাত্রী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য চত্বরে অবস্থান নিয়েছে।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকে ‘কোটার সংস্কার চাই—বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত—বৃথা যেতে দেব না’।

আজ ঢাবির কোনো বিভাগে ক্লাস বা পরীক্ষা হয়নি। নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীরাও কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। পাশাপাশি কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা সড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পুলিশও সেখানে অবস্থান নিয়েছে। টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে সেখানে।

এদিকে চট্টগ্রাম শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন বন্ধ করে দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনকারীরা। এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা রাজশাহী-নাটোর সড়ক অবরোধ করেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here