কে হচ্ছেন ইতালির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী?

0
341

খবর৭১: আজ রবিবার ইতালির পার্লামেন্ট নির্বাচন। কে হচ্ছেন দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী এ নিতে চলছে আলোচনা সমালোচনা। পার্লামেন্ট নির্বাচন নিয়ে দেশটিতে গত কয়েকদিন যাবত রাজনৈতিক বিতর্ক রয়েছে তুঙ্গে। কে হচ্ছেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বেরলুসকোনি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাথেও রেনজি নাকি নবাগত লুইজি ডি মাইও।

দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অনেকটা উদার প্রকৃতির ইতালি, ঐতিহাসিকভাবেই এদেশে নানান জাতিসত্তার মানুষ বসবাস করছে। অর্থনৈতিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চতুর্থ বৃহত্তম শক্তিশালী দেশ এটি এবং জোটের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সদস্য দেশ ইতালির নির্বাচন নিঃসন্দেহে ইইউ জোট রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলবে। নিজ নিজ দলের পক্ষে প্রচার প্রচারণায় কেউ কাউকে এতটুকু ছাড় দিচ্ছেন না। প্রতিশ্ৰুতি দিয়ে ভোট আদায়ের চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা।

ইউরোপের সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, ইতালিতে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে রাজনীতি করার বিষয়টি একদম নতুন। গত কয়েক বছর ধরে ইতালির অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে কোনোভাবেই অভিবাসী বা শরণার্থীদের দায়ী করা যায় না। অথচ বিরোধী দলগুলো ইতালিতে অভিবাসী কমাতে কঠিন ব্যবস্থা আরোপের পক্ষে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে অভিবাসন, বিশেষ করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে আসা অভিবাসী একটি বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এবারের নির্বাচনে মূলত তিনটি জোট ভোটযুদ্ধে সক্রিয়। চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বেরলুসকোনির জোট (ফরসা ইতালিয়া, লেগা নর্দ , ফারতেল্লি ইতালিয়াএবং আমরা ইতালিয়ান) সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাথেও রেনজির গণতন্ত্রী পার্টি পিডি এবং কৌতুক অভিনেতা পেঁপে গিরিল্লের ফাইভ স্টার মুভমেন্ট। (ফাইভ স্টার দলের নেতা পেঁপে গিরিল্লো দলীয় প্রধান হলেও তিনি সরাসরি নির্বাচনে অংশ নেন না। এ দলের নেতা তরুন রাজনীতিবিদ লুইজি ডি মাইও) এই দলগুলোর বাইরে ছোট দলগুলোর সব সময় বড় সমমনা দলগুলোর সঙ্গে জোট বেঁধে ক্ষমতায় যাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে ইতালিতে।

আজ ভোটাররা বাছাই করে নেবেন দেশের রাজনীতির আপাত ভবিষ্যত কর্ণধার৷ এরই মধ্যে শেষ প্রচারণা পর্ব৷ কিন্তু প্রচারণার শেষ দিনে যেন বোমা ফাটালেন দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী৷ প্রতিপক্ষদের ‘চরমপন্থি’ বলে আখ্যায়িত করলেন মাথে রেনজি৷

‘৪ মার্চ দেশের জন্য ইটালিয়ানদের যত আত্মত্যাগ সব বৃথা যাবে, যদি ‘চরমপন্থিদের’ হাতে দেশের কর্তৃত্ব চলে যায়৷’ ফ্লোরেন্সে শেষদিনের প্রচারণায় বলছিলেন তিনি৷

‘আমি বিরোধী দলে থাকব, তবু কখনো চরমপন্থিদের মিত্র হবো না৷’

গত শুক্রবার ছিল প্রার্থীদের প্রচারণা চালাবার শেষ দিন৷ শেষ দিনেই যেন শেষ মারণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করলেন ইতালির গণতন্ত্রী পার্টি পিডি-র সাধারণ সম্পাদক।

এদিকে, নির্বাচনে অতি ডান ও অতি বামপন্থিদের উত্থান নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে ইতালিজুড়ে।

সর্বশেষ জরিপ বলছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বার্লুসকোনির মধ্য ডানপন্থি দল ফোরসা ইটালিয়া নেতৃত্বাধীন জোট ৩৮ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পাবার সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে আছে৷

তার দল আরও তিনটি দলের সঙ্গে জোট গড়েছে, ডানপন্থিদের এবারের প্রচারণার মূল বিষয় ছিল, ৬ লাখ ‘অনিয়মিত’ অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানো৷ এছাড়া কর কমানোর বিষয়েও প্রচারণা চালিয়েছে তারা৷ লেগা নর্দের নেতারা অনবরত অভিবাসী ফেরত পাঠানোর নীতির প্রতি তাদের সমর্থন প্রচার করে গেছেন৷ তবে উত্তেজনার পারদ চরমে ওঠে যখন গত মাসে দেশটির পূর্বাঞ্চরের একটি শহরে দলটির এক স্থানীয় ২৮ বছর বয়সি নেতা আফ্রিকান অভিবাসীদের গুলি করা শুরু করে৷ প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে এই গোলাগুলি চলে৷ এতে বেশ কয়েকজন আহত হন৷
এদিকে, একক দল হিসেবে ইউরোপনীতির সমালোচনাকারী অতিবামপন্থি ফাইভ স্টার মুভমেন্ট বা এমফাইভএস এগিয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে৷ কিন্তু গত বছর সংস্কার হওয়া নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী তারা চাইলেই সরকার গঠন করতে পারবে না৷

তবে সবকিছুর ওপরে রেনজির মন্তব্য ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে৷ ইতালিতে অতি ডান ও অতি বামপন্থিদের উত্থানের বিষয়টিকে ইঙ্গিত করে এ কথা বলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী৷

২০১৬ সালে সংবিধানে সংশোধন আনতে তিনি যে রেফারেন্ডামের ডাক দিয়েছিলেন তাতে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেন রেনজি৷

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ভোট শুরু হয়ে চলবে রাত ১১টা পর্যন্ত তার পরই বোঝা যাবে কে হচ্ছেন ইতালির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here