কুড়িগ্রামের রাজারহাটে নাম সর্বস্ব সমিতির নামে হত দরিদ্রদের সঞ্চয়ের অর্ধকোটি টাকা আত্নসাতের অভিযোগ

0
499

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের সুলতান বাহাদুর গ্রামে নাঈম ইসলামী এসোসিয়েশন নামের একটি সঞ্চয় সমিতি গ্রাহকের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্নসাতের ঘটনায় ভূক্তভোগীরা কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ দাখিল করেছেন।
জানা যায়, উক্ত গ্রামে ২০০১ ইং সালে অসহায়, দুঃস্থ্য মানুষদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা বলে গ্রামের মাওলানা আলতাফ হোসেন ও মাওলানা আব্দুর রহিমসহ কতিপয় ব্যাক্তি উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে সমিতির কার্যক্রম শুরু করেন। প্রথমের দিকে তারা কিছু সামাজিক কাজ করলেও সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির পর তারা একই রেজিষ্ট্রেশন দিয়ে ডিপিএস (সঞ্চয়) পাশ বই তৈরী করে মাসিক ২শ টাকা থেকে ২ হাজার পর্যন্ত সঞ্চয় সংগ্রহ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ঋণ কার্যক্রম চালু করে। পরে ওই সমিতির সদস্যসহ অন্যদের মাঝে দ্বিগুণ মূল্যে ভোগ্য পন্য সরবরাহ কার্যক্রম চালু করা হয়। এভাবে ২হাজার সদস্যের সঞ্চয় ও ডিপিএসের মাধ্যমে প্রায় এককোটি টাকা ওই সমিতির মধ্যে জমা হয়। এরই মধ্যে সমিতি পরিচালনা কমিটির কতিপয় সদস্য মিলে সাধারণ সদস্যদের সঞ্চয়ের টাকা ব্যাংকে জমা না করে নিজেদের নামে জমি ক্রয়ের ঘটনা জানাজানি হলে সাধারণ সদস্যরা তাদের টাকা ফেরৎ চান। এরপর কিছু গ্রাহকের টাকা ফেরত প্রদান করা হলেও সংখ্যা গরিষ্ট সদস্যদের টাকা ফেরত প্রদানের কথা বলে পরিচালনা কমিটি টালবাহনা শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা সঞ্চয়ের টাকা ফেরত প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে ভূক্তভোগীরা কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক ও সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
সঞ্চয় সমিতির সাধারন সদস্য শামসুজ্জোহা সাজু ও তাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, সমিতির সভাপতি মাওলানা আলতাফ হোসেন, সাধারন সম্পাদক মাওলানা আব্দুর রহিম, মাওলানা আব্দুর রহমান ও শহীদুল ইসলাম লাইজু সহ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা আমাদের অর্ধকোটি টাকা আত্নসাত করেছেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দফায় দফায় শালিস করেও সুরাহা না হওয়ায় আমরা জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেছি।
সাধারন সদস্য মহিবুল্লাহ, মমিনুল ও সফিকুল ইসলাম জানান, সঞ্চয়ের প্রায় এককোটি টাকার মধ্যে কিছু সদস্যের আংশিক টাকা ফেরত দিয়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা তারা আত্নসাত করায় আমারা ওই সমিতির অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি।
এবিষয়ে ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রবীন্দ্র নাথ কর্মকার অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমি তিন দফা শালিস বৈঠক করার পরও তারা সঠিক হিসাব ও টাকা ফেরত প্রদানে ব্যর্থ হয়েছেন।
রাজারহাট উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের জন্য অভিযোগকারীদের চিঠি দেয়া হলেও তারা উপস্থিত হননি।
নাঈম ইসলামী এসোসিয়েশনের সভাপতি মাওলানা আলতাফ হোসেন স্থানীয় পর্যায়ে একাধিক শালিসের সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমাদের সমাজসেবা ও সমবায়ের রেজিষ্ট্রেশন রয়েছে। ঘটনা কোটি টাকার নয় ৪০ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকার সমস্যা আছে।
রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোখলেসুর রহমান জানান, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পত্রের অনুলিপি পেয়েছি। শুনেছি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান একাধিকবার চেষ্টা করলেও সুরাহা হয়নি তবে আমি উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে বৈঠকের ব্যবস্থা গ্রহন করব।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here