কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে নার্সকে ধর্ষণের পর হত্যা!

0
326

খবর ৭১ঃ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর এক নার্সকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত নার্স শাহিনুর আক্তার উরুফে তানিয়া ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে চাকরি করতেন। সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের গজারিয়া জামতলী এলাকায় স্বর্ণলতা পরিবহনে নৃশংস এ ঘটনা ঘটে।

ধর্ষণকারীরা শাহিনুরকে ধর্ষণের পর হত্যা করে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেলে পালিয়ে যায়। নিহত শাহিনুর কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে।

জানা যায়, শাহিনুর আক্তার উরুফে তানিয়া ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে চাকরী করতেন। সোমবার বিকালে তিনি এয়ারপোর্ট কাউন্টার থেকে টিকেট নিয়ে স্বর্ণলতা পরিবহনে উঠেন। স্বর্ণলতা বাস মহাখালী-থেকে কটিয়াদী হয়ে বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত চলাচল করে।
পিরিজপুর থেকে তার বাড়ির দূরত্ব মাত্র ১০ মিনিটের পথ।

শাহিনুর গতকাল বিকালে বাসে ওঠার পর থেকে তার পিতা এবং ভাইদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কথা বলেন। রাত ৮টার দিকে তিনি যখন মঠখোলা বাজার অতিক্রম করেন তখন তার পিতাকে ফোনে জানান, আধাঘন্টার মধ্যে বাড়ি পৌঁছতে পারবেন। তার পিতা তখন এশা এবং তারাবির নামাজের জন্য মসজিদে যাচ্ছিলেন।

এরপর সাড়ে আটটার দিকে বাসটি কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছলে ভাইয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। সেসময় তিনি বলেন, আর মাত্র পাঁচ সাত মিনিট লাগবে পিরিজপুর পৌঁছতে।

কিন্তু কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ডে বাসের সকল যাত্রী নেমে গেলে গাড়ির ড্রাইভার এবং হেলপার কৌশলে তার সঙ্গের চার-পাঁচজনকে যাত্রীবেশে গাড়িতে তোলেন। কটিয়াদী বাসস্ট্যান্ড পার হয়ে দুই কিলোমিটার দূরবর্তী ভৈবর-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের গজারিয়া জামতলী নামক একটি নীরব জায়গায় শাহিনুরকে জোরপূর্বক চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণ করে। পরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে বলে স্বজনদের ধারণা।

এদিকে তার মৃত্যুর পর ধর্ষণকারীরা রাত পৌনে এগারটার দিকে কটিয়াদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে দুর্ঘটনা কথা বলে লাশ ফেলে রেখে যায়।

এদিকে হাসপাতাল রেজিস্ট্রার সূত্রে জানা গেছে, শাহিনুর আক্তারের লাশ নিয়ে আসা ব্যক্তির পরিচয় লেখা রয়েছে, আল আমিন, পিতা ওয়াহিদুজ্জামান, গ্রাম ভেঙ্গারদি, কাপাসিয়া, গাজীপুর।

এদিকে পাঁচ মিনিটের কথা বলে দীর্ঘ সময় পিরিজপুর বাসস্ট্যান্ডে স্বর্ণলতা বাস না পৌঁছায় তার ভাই মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। গভীররাতে সংবাদ পায় শাহিনুরের লাশ কটিয়াদী হাসপাতাল থেকে থানায় নিয়ে রাখা হয়েছে। তার ভাই কফিল উদ্দিন সুমন জানায়, শাহিনুরের সঙ্গে একটি এলইডি ১৯ ইঞ্চি টেলিভিশন, একটি স্যামসং এনড্রয়েট মোবাইল ফোন ও বেতনের ১৫-১৬ হাজার টাকা ছিল।

কটিয়াদীতে থানার ওসি (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ড্রাইভার নূরুজ্জামান (৩৯), হেলপার লালন মিয়া (৩৩) কে আটক করা হয়েছে। শাহিনুরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, ব্যাগ, কাপড় চোপড় পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বিস্তারিত প্রতিবেদন চাওয়া হবে। তবে তার হাত, মুখ ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here