খবর৭১:ইরানের বিভিন্ন শহরে গত চার দিন ধরে যে তুমুল সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে তা শক্ত হাতে দমন করার অঙ্গীকার করেছে সে দেশের রিভোলিউশনারি গার্ডস বা বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী।
রিভোলিউশনারি গার্ডস পরিষ্কার করে দিয়েছে, তারা এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলন হিসেবে দেখছে না – বরং এটাকে সরকারের বিরুদ্ধে ছুড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছে।
বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কওসারি সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ‘এটা যদি জিনিসপত্রের দামের বিরুদ্ধে আন্দোলনই হত, তাহলে তো সেখান থেকে রাজনৈতিক স্লোগানও উঠত না – কিংবা সরকারি সম্পত্তি ও গাড়িতে আগুনও ধরানো হত না!’
কিন্তু এই বিক্ষোভকারীদের যারা কঠোরভাবে মোকাবিলা করার স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিচ্ছে, ইরানের সেই ইসলামিক রিভোলিউশনারি গার্ডস কোর বা আইআরজিসি আসলে ঠিক কারা?
বস্তুত এটি অত্যন্ত প্রভাবশালী একটি সশস্ত্র বাহিনী, দেশের সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে যাদের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এই বাহিনী প্রধানের দায়িত্বই হলো ইরানের সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখা এবং সে দেশের ইসলামিক ‘সিস্টেম’ বা সমাজব্যবস্থাকে রক্ষা করা।
১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক বিপ্লবের অব্যবহিত পরই এই আইআরজিসি বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল। তারপর থেকে এই বাহিনী ক্রমশ ইরানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক পরিমণ্ডলে একটি বিরাট শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। তাদের নিজস্ব পদাতিক সেনা, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী পর্যন্ত রয়েছে।
রিভোলিউশনারি গার্ডস হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবী সদস্যকে নিয়ে গড়া একটি মিলিশিয়া বাহিনীকেও নিয়ন্ত্রণ করে, যাদের নাম বাসিজ রেজিস্ট্যান্স ফোর্স। আইআরজিসি কখনো কখনো দেশের পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়েও কাজ করে। এই ডিসেম্বরেই তারা ঘোষণা করেছে যে আবার তারা সে কাজ করবে।
রিভোলিউশনারি গার্ডস প্রতিষ্ঠার সময় উল্লেখ করা হয়েছিল যে ‘যখন প্রয়োজন হবে’ তখনই তারা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করবে।
তবে ইরানের বেসামরিক জনতার সঙ্গে তাদের আচরণ নিয়ে অতীতে বার বারই বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তাদের এখতিয়ারের পরিধি কতটা- তা নিয়েও বিভিন্ন সময় প্রশ্ন উঠেছে।
খবর৭১/জি: