কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ভাগ করার দাবি

0
585

খবর৭১:বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের একটি অংশ বলছে, ‘ঢাকার কাকরাইল মসজিদ এবং টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানকে ভাগ করে দেয়াটা’ তাবলীগ জামাতের দুটি অংশের মধ্যে বিরাজমান সংঘাতময় অবস্থা নিরসনের অন্যতম উপায় হতে পারে।

ভারতের মাওলানা সাদ কান্দালভি-এর অনুসারী অংশটি বলছে, তাবলীগ জামাতের উভয় অংশের মধ্যে দূরত্ব অনেক বেড়ে গেছে।

মাওলানা সাদ-এর অনুসারী অংশের অন্যতম নেতা রেজা আরিফ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘টঙ্গীর মাঠটাকে ইজতেমার জন্য দেয়া হয়েছে এবং কাকরাইল মসজিদ তবলীগের জন্য দেয়া হয়েছে। তাহলে টঙ্গীর মাঠের সুষ্ঠু বণ্টন হতে পারে। অর্ধেক-অর্ধেক হতে পারে, আবার হয়তো সরকারের হাতে থাকতে পারে টঙ্গীর মাঠ। যাদের তবলীগের প্রয়োজন তখন তারা অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করতে পারে।’

তিনি বলেন, ইচ্ছে করলেই কাকরাইল মসজিদকে দুই ভাগ করে দেয়া সম্ভব।

রেজা আরিফ বলেন, ‘দুটো আলাদা গেইট করা সম্ভব। দুটো আলাদা মসজিদ করাও সম্ভব। যে যার-যার মতো করে ব্যবহার করুক। যখন আমাদের কাকরাইলে থাকার কথা তখন আমরা কাকরাইলে থাকি আর ওরা টঙ্গীতে থাকে। আবার ওদের যখন কাকরাইলে থাকার কথা, তখনও ওরা টঙ্গীতে থাকে। এ অন্যায়গুলোর কারণে আমাদের চাওয়া হচ্ছে টঙ্গী এবং কাকরাইল সম-বণ্টন হয়ে যাক।’

তিনি মনে করেন, ‘ইসলামের স্বার্থেই’ এ দুটো জায়গা ভাগ করে দেয়া যুক্তিসংগত।

নিজের মতের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে আরিফ বলেন, ‘ইসলামকে নিয়ে মারামারি করা করা, লোক হাসানো, টঙ্গী ময়দান দখল করা – এগুলো যাতে না হয়। অনেক রকম প্রবলেম তৈরি করার চেয়ে দুইদল যদি নিজেদের মতো করে আরামসে করে তাহলে সেটা ভালো নয়?’

কিন্তু মাওলানা সাদ কান্দালভির বিরোধী অংশ বলছে, মসজিদ কিংবা ইজতেমা ময়দান ভাগ করার কোন প্রশ্নই উঠে না।

মাওলানা সাদ বিরোধী অংশের একজন নেতা মাহফুজ হান্নান বলেন, ‘এটা তো মৃত ব্যক্তির সন্তানদের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ করার মতো কোন বিষয় না। তাছাড়া তারা ( সাদ অনুসারী) তো এখন আর মূল তাবলীগ জামাতে নেই। সেজন্য ওনারা কিছুই পাবেন না।’

দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণ:

বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের ভেতরে দু’টি গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছে বেশ কিছুদিন ধরে – যা সহিংস রূপ নিয়েছে শনিবারের (১ ডিসেম্বর) সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে ।

এই দ্বন্দ্বের কেন্দ্রে আছেন তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় নেতা ভারতীয় মোহাম্মদ সাদ কান্দালভি। এই অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই ঢাকার টঙ্গীতে এবার বিশ্ব ইজতেমা হতে পারেনি।

তাবলীগ জামাতের একটি গ্রুপ ১১ই জানুয়ারি থেকে ইজতেমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গত মাসে তাবলীগ জামাতের দুই গ্রুপকে নিয়ে বৈঠক করেন – যেখানে ওই তারিখে ইজতেমা না করার সিদ্ধান্ত হয়।

বেশ কিছুদিন ধরেই কান্দালভি তাবলীগ জামাতে এমন কিছু সংস্কারের কথা বলছেন – যা এই আন্দোলনে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে।

সাদ কান্দালভি বলেন, ‘ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় প্রচারণা অর্থের বিনিময়ে করা উচিত নয়’ – যার মধ্যে মিলাদ বা ওয়াজ মাহফিলের মতো কর্মকাণ্ড পড়ে বলে মনে করা হয়।

কিন্তু তার বিরোধীরা বলছেন, সাদ কান্দালভি যা বলছেন- তা তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা নেতাদের নির্দেশিত পন্থার বিরোধী। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে ইজতেমায় অংশ নেবার জন্য সাদ কান্দালভি ঢাকায় আসলেও ইজতেমায় অংশ নিতে পারেননি। তিনি কাকরাইল মসজিদে অবরুদ্ধ ছিলেন।

সাদ কান্দলভির অনুসারীরা বলছেন, কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের নেতারা সাদ কান্দালভির বিরুদ্ধে সক্রিয়। কিন্তু হেফাজতের নেতারা এ অভিযোগ সরাসরি স্বীকার করেন না।

হেফাজতে ইসলামের একজন ঊর্ধ্বতন নেতা মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, এখানে হেফাজত বা অন্য কোন রাজনৈতিক দলের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
খবর৭১/জি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here