কলাপাড়ায় স্কুল মাঠেই বসে গবাদিপশু বিক্রির হাট যেন দেখার কেউ নেই !

0
464

রাকিব হাসান, পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
সাত শতাধিক শিক্ষার্থী। স্কুলে এসে কেউই মুখ থেকে রুমাল সরাতে পারে না। কেননা স্কুলের মাঠসহ চারিদিকে গরু, ছাগলের মলমুত্র ছড়ানো ছিটানো। বন্ধ থাকে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত সমাবেশ (এসেম্বলি)। স্কুল মাঠে গরুর হাট বসানোর কারনে প্রতি রোববার ও সোমবার এ চিত্র দেখা যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ার পাঁচজুনিয়া ধানখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
কলাপাড়া-আমতলী সীমান্তবর্তী পাঁচজুনিয়া ধানখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সাত শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। শিক্ষক ১৪ জন। কিন্তু এ বিদ্যালয় মাঠে প্রতি রোববার সাপ্তাহিক বাজারের দিন বসে গরুর হাট। গত প্রায় ১০ বছর ধরে এ গবাদিপশু বিক্রির হাট বসছে। এতে বিদ্যালয়ের লেখাপড়া, শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক চলাফেলা ও খেলাধুলায় বিঘœ ঘটলেও শুধু ব্যবসায়ীক লাভবান হওয়ায় আশায় গবাদিপশু বিক্রির হাট অন্যত্র স্থানান্তর করা হচ্ছে না।
সরেজমিনে গত রোববার গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় মাঠে শতশত গবাদিপশু বেঁধে রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। পাশে বিদ্যালয়ে ক্লাসে নাকে রুমাল চেপে বসে আছে শিক্ষার্থীরা। বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের হৈ-হুল্লোর,চিৎকারে শিক্ষকরাও ঠিক মতো ক্লাস নিতে পারছেন না। এ কারণে প্রতি রোববার দুপুর ১২ টা বাজলেই বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে দিতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মীম অক্তার, মেহিদী হাসান জানায়, গরুর হাট বসায় তারা ক্লাসে ঠিক মতো বসতে পারছে না। প্রচন্ড দূগন্ধে নামে রুমাল চেপে বসতে হয়।
সপ্ত শ্রেণির শিক্ষার্থী সাবরিনা সুলতানা ও আবদুল্লাহ আল নোমান জানায়, তারা ছোট থেকে দেখে আসছেন স্কুলের সামনে গরুর হাট। এ কারণে রোববার তাদের এসেম্বলি হয়না।
একাধিক ছাত্রী জানায়, রোববার এই গরুর হাট বসায় তারা বাথরুমেও যেতে পারেন না। কেননা চারিদিকে হাজার হাজার মানুষ থাকে। কখনও কখনও মাঠে বাঁধা গরু-ছাগল দৌড়ে ক্লাসেও ঢুকে পড়ে।
একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করেন, স্কুলের সামনে হাট বসার কারনে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে রোববার দিন চিন্তায় থাকেন। যদিও সোমবার সকালে স্কুল মাঠ পরিস্কার করা হয়, কিন্তু দূগন্ধ থেকেই যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম জানান, গরুর হাট বসার কারনে রোববার ও সোমবার বিদ্যালয়ের নিয়মিত এসেম্বলিও করাতে পারেন না। এই হাটটি স্থানান্তরের জন্য উপজেলা শিক্ষা প্রশাসনকে বারবার অবহিত করেছেন। কিন্তু হাটটি অন্যত্র সরানো হয়নি। সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগে পড়েন কোরবানীর সময়ে। তখন কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা এই মাঠে বাঁধা থাকে গবাদিপশু।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল ওহাব মুন্সী জানান, এই হাট বসার কারনে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া ও শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান সাংবাদিকদের জানান, স্কুলের সামনে থেকে এই গবাদিপশুর হাট অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here