কলাপাড়ায় শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি ও বদলী বানিজ্যের অভিযোগ

0
319

খবর৭১:রাকিব হাসান, পটুয়াখালী প্রতিনিধি: কলাপাড়ায় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিলাল সিকদারের ঘুষ-দুর্নীতি, অনিয়ম ও বেপরোয়া বদলী বানিজ্যে ভেঙ্গে পড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা স্তরের চেইন অব কমান্ড।
এমনকি খোদ প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এর আদেশ অগ্রাহ্য করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ওয়ান ইলেভেনের সময় ঘুষ কেলেংকারীতে আটক হওয়া মনিলাল সিকদারের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, ২০১৭ সালে কলাপাড়ায় যোগদানের পর থেকে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন মনি লাল সিকদার।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য স্থানীয় সরকার
প্রকৌশল অধিদপ্তরের ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে কমিশন, প্রাক- প্রাথমিকের শিক্ষা উপকরনের বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে কমিশন, আইসিটি প্রকল্পের অর্থ গায়েব, প্রশ্ন প্রত্র বানিজ্য এবং শিক্ষকদের শ্রান্তি বিনোদনের ভাতা থেকে কমিশন নেয়া ছাড়াও টাকা ছাড়া কোন কাগজেই স্বাক্ষর করেন না তিনি।
একই অর্থবছরে শিক্ষকের বদলী বানিজ্যে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
এছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ২৫ মার্চ’র এক অফিস আদেশে ২৩ জন, ২৯ মার্চ’র পৃথক দু’টি অফিস আদেশে ৬ জন এবং ৩০ মার্চ’র এক অফিস আদেশে ৪ জন শিক্ষককে বদলী করে ফের কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। এতে ২০০২ সালে কলাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননাকারী শিক্ষিকা মোসা: নুরুন্নাহার বেগম (মাদ্রাসা শিক্ষক মহিউদ্দীনের স্ত্রী) কে শিক্ষা কর্মকর্তা মনিলাল সিকদার পূর্ব সোনাতলা বিদ্যালয় থেকে পৌরশহরের রাজেন্দ্র প্রসাদ সরকারী বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে বদলী করে পুরস্কৃত করেন।
ওই সময়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননার প্রতিবাদ করায় প্রধান শিক্ষক মো: জাহাঙ্গীর আলমকে মিথ্যা মামলায় হাজতবাস পর্যন্ত করতে হয়েছে। এছাড়া জন্মগত শারিরীক প্রতিবন্ধী সহকারী শিক্ষিকা রমা রানী রায় এর নীলগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পৌরশহরের রহমতপুর কাজী গোলাম আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলীর আবেদনে খোদ প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এর ’ব্যবস্থা নিন’ আদেশ, স্থানীয় এমপি মাহবুবুর রহমান ও মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার এর সুপারিশ অগ্রাহ্য করেন মনিলাল সিকদার।
এরপর পৌরশহরের রহমতপুর বিদ্যালয়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে চাকামইয়া গুচ্ছগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সহকারী শিক্ষক মোফাজ্জেল হোসেনকে বদলী করেন তিনি। মনিলালের এ বেপরোয়া বদলী বানিজ্যে পদ শূন্য হওয়ার তথ্য গোপন করে ও জ্যেষ্ঠতা নীতি লংঘন করে বদলী আদেশ জারী করায় ভেঙ্গে পড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা স্তরের চেইন অব কমান্ড। ফলে খাঁজুরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মনিলালের বদলীকৃত শিক্ষক খলিলুর রহমানের যোগদান ঠেকাতে ক্লাশ বর্জন করে ছাত্র-ছাত্রীরা।
এছাড়া উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের রসুলপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে একজন শিক্ষক দিয়ে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের একটি সূত্র জানায়,
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনি লাল সিকদার ওয়ান ইলেভেনের সময়
বরিশাল জেলায় কর্মরত থাকাকালীন সময়ে ঘুষ কেলেংকারীতে আইন শৃংখলা
রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছিলেন। তার বেতন-ভাতা নিয়েও সমস্যার
সৃষ্টি হয়েছিল।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মনিলাল সিকদার তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ
অস্বীকার করে বলেন, বদলী সংক্রান্ত আবেদন যাচাই-বাছাই, অনুমোদন শিক্ষা
কমিটি করে থাকে।
তাই এ সংক্রান্ত তথ্য পেতে প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির
সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারী পরিপত্র
অনুযায়ী উপজেলা শিক্ষা কমিটি প্রাথমিক স্তরের সকল কিছু দেখ ভাল করে থাকে।
তারপরও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মনিলাল সিকদারের বিরুদ্ধে
দুর্নীতি-অনিয়মের সত্যতা পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান
তিনি।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here