খবর ৭১ঃপ্রযুক্তির যুগে বড়দের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পিছিয়ে নেই শিশুরা। সম্প্রতি অনেক শিশুকিশোরদের কম্পিউটার গেমসের প্রতি আসক্তি তৈরি হয়েছে।পড়লেখায় মনোযোগ না দিয়ে তারা গেমস খেলার দিকে বেশি ঝুঁকে পড়েছে।
সকালে ঘুম ভাঙা থেকে রাতে শুতে যাওয়া পর্যন্ত এক মিনিটও মোবাইল হাতছাড়া করেন না অনেকে। কেউ কেউ কম্পিউটার গেমস, হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুকসহ নানা সামাজিক মাধ্যমে সারাদিন ব্যস্ত থাকেন। কেউ আবার মোবাইলের চার্জ শেষ হয়ে গেলে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত মাত্রায় কম্পিউটার গেমস আসক্তি ডেকে আনতে পারে বিপদ।
তবে শিশুকিশোরদের কম্পিউটার গেমস খেলার প্রবণতাকে পছন্দ করেন না বেশিরভাগ অভিভাবক। একে ‘ডিজিটাইল হেরোইন’ বলেও অভিহিত করেন অনেকে। সম্প্রতি কম্পিউটার গেমস খেলার আসক্তিকে মানসিক সমস্যা বলে ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। খবর বিবিসি বাংলা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন অনলাইন জানিয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজেস এর ১১শ সংস্করণে এ কথা জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে অনেক চিকিৎসক মনে করছেন, এই বিবৃতিতে স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে গেমস আসক্তি বা ‘গেমিং ডিজঅর্ডার’ অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য নয়।
গেমিং ডিজঅর্ডারের বৈশিষ্ট্য
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞ ড. ভ্লাদিমির পজনিয়াক জানান, কম্পিউটার গেমসে আসক্তির তিনটি মূল শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এগুলো হলো-
দৈনন্দিন জীবনে অন্যান্য কাজের চেয়ে গেমিংকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া
নেতিবাচক আচরণের পুনরাবৃত্তি
ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, শিক্ষাগত বা কর্মক্ষেত্রে স্বাভাবিক আচরণ ব্যাহত হওয়া এবং এর ফলে ঘুম ও খাওয়া দাওয়ায় অনিয়ম দেখা দেওয়া
পজনিয়াক বলেন, ‘বিভিন্ন মাদক ব্যবহারে যেসব লক্ষণ দেখা যায়, কম্পিউটার গেমসে আসক্তির ফলেও তেমনই লক্ষণ দেখা যায়।‘ এ ধরনের লক্ষণ অন্তত ১২ মাস বজায় থাকলে তাকেই গেমিং ডিজঅর্ডার বলা যাবে।
পজনিয়াক জানান, সারা বিশ্বে লাখ লাখ গেমার আছেন। তারা প্রতিযোগিতামূলক গেমিং করেন। কিন্তু তাই বলে তাদেরকে গেমিং ডিজঅর্ডারে আসক্ত বলে দাবি করা যাবে না। নিয়মিত গেমিং করেও তারা সুস্থ থাকতে পারেন। এই ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা আদতে বেশ কম। শুধুমাত্র চিকিৎসকরাই এই রোগ শনাক্ত করতে পারেন। তা থেকে মুক্তির জন্য বিভিন্ন ধরনের থেরাপির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশা করছে, তাদের এই বিবৃতিতে গেমিং ডিজঅর্ডার অন্তর্ভুক্ত করার ফলে এই সমস্যাটি নিয়ে আরও গবেষণা হবে।
খবর ৭১/ইঃ