এ বছরও বাড়ল হজের ব্যয়

0
356

খবর৭১ঃচলতি বছর সরকারি-বেসরকারি দুই ধরনের হজযাত্রায় খরচ বেড়েছে। এর আগের বছরও হজে যাওয়ার খরচ বেড়েছিল।

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি-২০১৯’ এবং ‘হজ প্যাকেজ-২০১৯’ এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে এ বছর ব্যয় বাড়িয়ে হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত করা হয়েছে। হজ প্যাকেজ ১-এ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা। আগের বছরের চেয়ে যা ২০ হাজার ৫৭১ টাকা বেশি। প্যাকেজ ২-এ ১২ হাজার ৬৪১ টাকা বাড়িয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।

হজের ব্যয় বাড়ছে প্রতি বছরই। বিগত ৫ বছরে জনপ্রতি হজের ব্যয় বেড়েছে ৬৩ হাজার ৭৫৫ টাকা। প্রতি বছর গড়ে বেড়েছে ১২ হাজার ৭৫১ টাকা। সৌদি আরবে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস চার্জ ও ভাড়া বাড়ানোর কারণে এ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন লাখ ৪৪ হাজার টাকার কম নেওয়া যাবে না।

শফিউল আলম বলেন, এ বছর কোরবানির খচর ৪৭৫ রিয়াল থেকে বাড়িয়ে ৫২৫ রিয়াল করা হয়েছে। বেসরকারিভাবে বিমান ভাড়া এক লাখ ২৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গতবারের থেকে ১০ হাজার ১৯১ টাকা কম।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ আগস্ট হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে পারবেন। তাদের মধ্যে ৭ হাজার ১৯৮ জন যাবেন সরকারি ব্যবস্থাপনায়। বাকিরা ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত হজ এজেন্সির মাধ্যমে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এ বছর যারা হজে যেতে চান তাদের পাসপোর্টের মেয়াদ ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকতে হবে।

শফিউল বলেন, আর্থিক ও শারীরিকভাবে সমর্থ ব্যক্তিদের পাশাপাশি মানসিকভাবে সুস্থ ব্যক্তিরা হজে যেতে পারবেন। আগে মানসিকভাবে সমর্থন না থাকলেও হজে যাওয়ার সুযোগ ছিল।

তিনি বলেন, এবার রমজান মাসের আগেই সৌদিতে বাড়ি ভাড়া করতে হবে। সৌদির বাড়ি ভাড়া এবং সার্ভিস ও ক্যাটারিং চার্জ অনলাইনে জমা দিতে হবে। হজযাত্রীরা সৌদি আরবে যে বাড়িতে থাকবেন এবার থেকে ওই বাড়ির ঠিকানা পাসপোর্টের সঙ্গে দেয়া থাকবে।

বিগত কয়েক বছরের হজ প্যাকেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ৫ বছরে জনপ্রতি হজের ব্যয় বেড়েছে ৬৩ হাজার ৭৫৫ টাকা। আর প্রতি বছর গড়ে বেড়েছে ১২ হাজার ৭৫১ টাকা। প্যাকেজ ১-এ ২০১৭ সালে ছিল ৩ লাখ ৮১ হাজার ৫০৮ টাকা, ২০১৬ সালে ৩ লাখ ৬০ হাজার ২৮ টাকা এবং ২০১৫ সালে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪৫ টাকা। যা চলতি বছরের চেয়ে ৬৩ হাজার ৭৫৫ টাকা কম।

প্যাকেজ ২-এ ২০১৭ সালে ছিল ৩ লাখ ৩১ হাজার ২৪০ টাকা, ২০১৬ সালে ৩ লাখ ৪ হাজার ৯০৩ টাকা এবং ২০১৫ সালে ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০৬ টাকা। যা চলতি বছরের তুলনায় ৪৭ হাজার ৭৯৪ টাকা কম।

চলতি বছর উভয় প্যাকেজেই বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ২৮ হাজার টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ১০ হাজার ১৯১ টাকা কম। গত বছর বিমানের ভাড়া ছিল এক লাখ ৩৮ হাজার ১৯১ টাকা। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে হজ প্যাকেজে বিমান ভাড়া এক লাখ ৪৪ হাজার টাকা নির্ধারণ করার প্রস্তাব দিয়েছিল।

এ বছর মক্কা ও মদিনায় বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৬৭ হাজার ৯৬২ টাকা। সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি ও ভাড়ার ওপর কর আরোপ করায় গত বছরের তুলনায় বাড়ি ভাড়া ১০ হাজার ৩৪৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

মক্কা-মদিনা-মুজদালিফা-মিনা-আরাফাহ যাতায়াতের বাস ভাড়া ৪০ হাজার ৮৮২ টাকা। গত বছরের তুলনায় এটি ১৫ হাজার ৩২৬ টাকা বেশি। জমজমের পানির খরচও বেড়েছে এক টাকা ৮৭ পয়সা। গত বছর এই খরচ ছিল ২৫৮ টাকা।

সৌদি হজ মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ৫০ সৌদি রিয়াল এবং জেনারেল কার সিন্ডিকেটের অনুকূলে আরও ১৮ সৌদি রিয়াল সমপরিমাণ এক হাজার ৫৩০ টাকা পরিশোধ করবেন প্রতি যাত্রী। সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ সরকার এ অর্থ দেবে।

ট্রেন সার্ভিস যারা গ্রহণ করবেন, তাদের অতিরিক্ত ২৪ হাজার ৯৮১ টাকা পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া অন্যান্য হজযাত্রীর ক্ষেত্রে ১৯ হাজার ৩৫ টাকা সার্ভিস চার্জ ও ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here