খবর৭১: অধ্যাপক ড. মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুতির আদেশ অবৈধ ঘোষণার রায়ের বিরুদ্ধে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে হাইকোর্টের রায়ের ওপর দেওয়া স্থগিতাদেশও বহাল রেখেছেন আদালত।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ বৃহস্পতিবার লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি মেয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গেছেন। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা হচ্ছেন অভিভাবক সমতুল্য। আর সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছেন। এ ধরনের ব্যক্তিকে কি ছেড়ে দেয়া যায়?
ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) গণিত ডিসিপ্লিনের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০১৭ সালের ২৪ আগষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ১৯২তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
চাকরিচ্যুতির আদেশে বলা হয়, গণিত ডিসিপ্লিনের জনৈক ছাত্রী কর্তৃক যৌন হয়রানির আনীত অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত যৌন নিপীড়ন অভিযোগ কমিটির নিকট সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ফলে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নীতিমালা, ২০০৮’ এর ৬.৩ (ঝ) নং ধারা অনুযায়ী আপনার নৈতিক অসচ্চরিত্রতার দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হলো।
এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন অভিযুক্ত শিক্ষক। পরে হাইকোর্ট চাকরিচ্যুতির আদেশ অবৈধ ঘাষণা করে রায় দেয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল কর্তৃপক্ষের পক্ষে অ্যাডভোকেট এএম আমিনউদ্দিন ও শিক্ষকের পক্ষে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানি করেন।
শুনানি শেষে আপিল বিভাগ উপরোক্ত আদেশ দেন। প্রসঙ্গত প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন যখন হাইকোর্টে বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তখন তার দেওয়া এক রায়ের প্রেক্ষিতে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নীতিমালা প্রণয়ন করে সরকার। ওই নীতিমালার ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের যৌন হয়রানির ঘটনার তদন্ত ও বিচার হচ্ছে।