খবর৭১ঃ চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ভুজপুর বাগান বাজার ইউনিয়নের চিকনেরখিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোকন চন্দ্র মজুমদারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে অসন্তোষ ও চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষকতা জীবনে অভিযুক্ত এই শিক্ষক পূর্বে বেশ কয়েকটি স্কুলে একই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে সূত্রে জানা যায়। ভুজপুর কোম্পানি টিলা ও বাগান বাজার গজারিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তাকে শ্লীলতাহানির জন্য ২ বছর পূর্বে বদলি করা হয়।
উপজেলা থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরে বাগান বাজার ইউনিয়নের ২ নাম্বার ওয়ার্ডে চিকনেরখিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষক খোকন চন্দ্র প্রায় সময়ই চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের অফিসে ডেকে নিয়ে তার কাছে দাঁড় করিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন উস্কানিমূলক বাক্য ব্যবহার করতেন। তার এ ধরনের আচরণে কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীরা রীতিমত আতঙ্কিত। ভয়ে এবং সামাজিক মান-সম্মানের দিকে তাকিয়ে বিষয়টি তারা গোপন রাখে।
সম্প্রতি বিষয়টি স্থানীয় কয়েকজন যুবকের নজরে আসলে তারা গোপনে এটি ভিডিও করেন।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে অভিভাবক ও এলাকাবাসীদের কথা বলা জানা যায়, এই প্রধান শিক্ষক এর আগেও স্কুলের ছাত্রীদের সাথে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটিয়েছিল। তথ্য-প্রমান না থাকায় সে সময় তিনি পার পেয়ে যান। এখন ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে এই শিক্ষকের এসব অপকর্ম দৃশ্যমান হওয়ায় এলাকাবাসী এবং স্কুলের অভিভাবকরা উক্ত শিক্ষকের কঠোর শাস্তির জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।
এদিকে সরেজমিনে স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহকালে প্রধান শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদেরও হুমকি প্রদান করেন স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আবুল কালাম।
উক্ত স্কুলের শিক্ষক নিজাম উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন থেকে ছাত্রীদের সাথে এ ধরনের যৌন হয়রানিমূলক আচরণ করে আসছেন। কয়েকজন ছাত্রী বিষয়টি আমাকে জানিয়েছিল।’
এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ সভাপতি মনির হোসেন মুটোফোনে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত হওয়ার পর স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি এবং এ বিষয়ে আমরা স্কুল পরিচালনা পর্ষদ দ্রুত একটা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক খোকন চন্দ্র মজুমদার বিষয়টির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষক নিজাম উদ্দিনকে স্কুলের শ্রেণি কার্যক্রমসহ প্রশাসনিক বিষয়ে কড়াকরি আরোপ করায় তিনিসহ স্থানীয়রা মিলে আমার বিরুদ্ধে এ ষড়যন্ত্র করেছেন। এ ধরনের অভিযোগের সঙ্গে আমার কোনও সম্পৃক্ততা নেই।’
এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার হাসানুল কবির বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি যদি সত্য প্রমাণিত হয়, দ্রুত উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’