এম শিমুল খান প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ফুলকুমারী গ্রামের মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন ডাকাত আতঙ্কে। রাতের পর রাত জেগে পাহারার ব্যবস্থা করেছে স্থানীয়রা। ডাকাত দল রাতের আঁধারে গামছা বা রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে প্রায়ই রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন বাড়িতে হানা দিচ্ছে। সেই সঙ্গে ঘটছে চুরির ঘটনাও। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে একটি আবেদন করেছেন ওই গ্রামের বাসিন্দা পাগল বাড়ৈ।
ফুলকুমারী গ্রামের পাগল বাড়ৈর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত আষাঢ় মাসে মুখোশধারী একদল ডাকাত তার বাড়িতে আক্রমণ করে। পরে চিৎকার করলে ডাকাতদল পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় ডাকাতদল একটি পিস্তল তার বাড়ির উঠানে ফেলে যায়। পরে সিন্দিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে পুলিশ পিস্তলটি উদ্ধার করে। এরপর থেকে প্রায়ই রাতে তার বাড়িতে ও গ্রামের বিভিন্ন স্থানে রাতে ডাকাতির চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু গ্রামবাসী সতর্ক থাকায় এবং পাহারার ব্যবস্থা করায় ডাকাত দল ডাকাতি করতে পারছে না।
পাগল বাড়ৈ সাংবাদিকদের বলেন, ডাকাতের ভয়ে আমি ঘরে থাকতে পারছি না। ভয়ে এ বাড়ি ও বাড়ি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। ছোট ছেলে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দেবে। এই কারণে তার লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে। আমার এক ছেলে বিদেশে থাকে। জমি জমা বিক্রি করে ও ধার দেনা করে বিদেশ পাঠাই। এখনও দেনা পরিশোধ করতে পারিনি। ডাকাত মনে করছে আমার ঘরে অনেক টাকা পয়সা আছে, তাই তারা বার বার হানা দেওয়ার চেষ্টা করছে। বিষয়টি পুলিশ সুপার ও সিন্দিয়াঘাট পুলিশকে লিখিত আকারে জানানো হয়েছে। আমি শুধু নিজের ঘরে শান্তিতে ঘুমাতে চাই এটাই আমার দাবি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার বেশ কয়েকজন বলেন, আমাদের সমস্যা হলে সিন্দিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে জানাই। কখনও আসে আবার আসে না। এই গ্রাম থেকে সিন্দিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়ি বেশ দূরে। পুলিশ আসার আগে ডাকাত বা চোররা পালিয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী দল বেঁধে পাহারার ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ভাবে না ঘুমিয়ে কত রাত জাগবো। বর্তমানে আমরা অনেকটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
জলিরপাড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য অসীম সরকার বলেন, ‘ফুলকুমারী গ্রামে চুরি, ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা এলাকাবাসী পাহারাদারের ব্যবস্থা করেছি। এ ব্যাপারে সিন্দিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়ির আইসিএস আই মহিদুল ইসলামের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনি আমাদের সহযোগিতা করবেন।
সিন্দিয়াঘাট পুলিশ ফাঁড়ির আইসি এস আই মহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বেশ কিছু দিন আগে পাগল বাড়ৈর বাড়িতে এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল। তখন তার বাড়ি থেকে একটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়। ওই গ্রামে তখন পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছিল। পরিবেশ ঠিক থাকায় পুলিশ পাহারা উঠানো হয়। তবে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন পাগল বাড়ৈর ঘরে ম্যাগনেট রয়েছে। তিনি ম্যাগনেটের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এই কারণে ম্যাগনেট পার্টি তার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতে পারে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ম্যাগনেটের বিষয়টি গুজব। এ সময় আইসি আরো বলেন, এ নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে ডাকাতি বা চুরির কোনও ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটেনি। আইন শৃঙ্খলা যাতে ঠিক থাকে সে বিষয়ে আমাদের কঠোর নজরদারি রয়েছে।
খবর ৭১/ইঃ