একান্ত সাক্ষাৎকারে লালমনিরহাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কামরুজ্জামান সুজন

0
396

আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাটঃ

লালমনিরহাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কামরুজ্জামান সুজন। উপজেলা পরিষদের দায়িত্বভার পালন করতে সক্ষম কামরুজ্জামান সুজন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দল পরিচালনায় অত্যান্ত দক্ষতার পরিচয় দেয়ার পাশাপাশি কোন বিতর্কের ছাপ নেই কামরুজ্জামান সুজনের অতীত জীবনে। সৎ, নিষ্টাবান ও নির্ভীক, যোগ্য, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতামুলক দক্ষ ব্যক্তি হিসেবে এলাকার বেশ জনপ্রিয় তরুন, মেধাবী, পরিশ্রমী, জনপ্রতিনিধি একসময়ের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে মাঠ কাঁপানো সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কামরুজ্জামান সুজন। সদর উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তার প্রার্থীতায় উচ্ছ্বাস ও প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত করেছেন। কামরুজ্জামান সুজন এর একান্ত সাক্ষাৎকার গ্রহন করেন আমাদের লালমনিরহাট প্রতিনিধি: আসাদুল ইসলাম সবুজ।
তার পুরো নাম, মোঃ কামরুজ্জামান সুজন (৪৫), ডাক নাম সুজন হিসেবে উপজেলাবাসীর কাছে পরিচিত। তার পিতা ভাষা সৈনিক, মহান মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক ও শিক্ষক মৃত: মনিরুজ্জামান। বাড়ি লালমনিরহাট পৌর শহরের সাপটানা রোডস্থ (জুম্মাপাড়ায়)। ৪ ভাই ৫ বোনের মধ্যে ৭নম্বর সন্তান কামরুজ্জামান সুজন। তিনি ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯ সালে লালমনিরহাট পৌর শহরের সাপটানা রোডস্থ (জুম্মাপাড়া) বাসায় একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জম্ম গ্রহন করেন। তিনি ১৯৯০ সালে ৫ম শ্রেণি ও ১৯৯৫ সালে লালমনিরহাট সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পাশ করেন। ১৯৯৮ সালে লালমনিরহাট সরকারী কলেজ থেকে এইস.এস.সি পাশ করেন। সেই সময় থেকে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজকের অবস্থানে আসেন ছাত্রলীগের সাবেক এ নেতা। তাই আগামী ১০মার্চ লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলাবাসীর চাওয়া-পাওয়া নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন, এ বার আনারস প্রতীক এর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কামরুজ্জামান সুজন।
রাজনীতি কি ভাবে শুরু করেছেন ?
পারিবারিক ও তৎকালীন লালমনিরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, মহান মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক ও বঙ্গবঙ্গুর এক সময়ের ঘনিষ্টসহচর মরহুম আলহাজ্ব আবুল হোসেনের হাত ধরে ১৯৯৩ সালে নবম শ্রেণিতে পড়াবস্থা কামরুজ্জামান সুজন রাজনীতিতে পা রাখেন। তিনি সেই স্কুল ও কলেজ কমিটি থেকে শুরু করে তৃণমূল আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন আজও।
বর্তমান আওয়ামীলীগের কোন পদে আছেন ?
২০০২ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, লালমনিরহাট জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমান সাবেক ছাত্র নেতা হিসেবে তৃণমূল আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদেরকে সুসংগঠিত করছেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার ইচ্ছা কেন ?
লালমনিরহাট সদর উপজেলাবাসীর কাঙ্খিত দাবী ইতিপূর্বে নির্বাচিত কোন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পুরন করতে পারেননি। এতে জনগণের সাথে উপজেলা পরিষদের দুরত্ব বেড়েছে। জনগণ ভাত-কাপড় চায় না। জনগণ সুখ-দুঃখে জনপ্রতিনিধিদের পাশে পেতে চান। শহর থেকে শুরু করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সাথে দীর্ঘদিনের পথচলা। আমি জানি তারা কি চান। তাই আমি তাদের আশা-আকাঙ্খা পুরনের লক্ষ্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হতে চাই।
স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মী ও জনসাধারণ এনির্বাচনে কিরকম সাড়া দিচ্ছে ?
দলীয় নেতাকর্মীসহ তৃণমুল পর্যায়ের জনসাধারনের সেবক হয়ে দীর্ঘদিন যাবত পাশে আছি এবং আগামীতে থাকবো। উপজেলাবাসী তথা জনগণ আমার পরিবার। তাদের সুখ-দুঃখ ঘিরে আমার রাজনীতি জীবন। তাদের সাথে অনেক আগেই আমি নির্বাচন বিষয়ে কথাবার্তায় সমর্থন ও সাড়া নিয়ে উপজেলা নির্বাচনে মাঠে নেমেছি। এতে জেলা ও উপজেলা আ’লীগ, মহিলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, তরুনলীগ ও শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীসহ গ্রামের কৃষক, মেহনতি ও খেঁটে খাওয়া অসহায় মানুষগুলো আমার সাথে আছেন।
নির্বাচিত হলে উপজেলার কি কি উন্নয়ন করবেন ?
আমি ইতিমধ্যে ব্যাক্তিগত উদ্দ্যোগে এলাকার স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মন্দির, মাদারাসা ও রাস্তা-ঘাট সংস্কার করে করেছি। এছাড়াও কৃষক, মেহনতি ও খেঁটে খাওয়া অসহায় মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করবো। জেলার প্রধান সমস্যা বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে। লালমরিহাহট সদর উপজেলাকে একটি উন্নত যোগাযোগ ও বাসযোগ্য আধুনিক উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলে আপনার ভুমিকা কি ?
পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতা করার পাশাপাশি মাদক ও সন্ত্রাসের কুফল সর্ম্পকে প্রতিটি সভা-সমাবেশে আলোচনা করা হবে। আমি মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলে জনগণকে ঐক্যবন্ধ থাকার আহবান জানাই। ইভটিজিং, সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীরা আপনার/আমার ভাই-বোন হতে পারে। তাই তাদের সাথে খারাপ আচারণ বা ঘৃনা না করে সুপথে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করা হবে। উপজেলা হবে মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত।
ভোটারদের কাছে আপনার প্রত্যাশা কি ?
সদর উপজেলার মানুষ খুব সহজ-সরল। এ উপজেলার মুসলিম, হিন্দু, খিষ্ট্রান সম্প্রিতি বন্ধন রয়েছে যুগ যুগ ধরে। সবশ্রেণি পেশার মানুষ আমাকে পাশে পেয়েছেন। আমাকে যখন যেটা বলেছেন, আমি শুনেছি, পারলে উপকার করেছি কিন্তু কারও কোন ক্ষতি করি নাই। উপজেলা বাসী কখনো আমাকে নিরাশ করেনি। জনগণের জন্য নির্বাচন। জনগণ তরুƒণ উদীয়মান জননেতা, পরিশ্রমী ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমি আশা করি জনগণ শতভাগ সৎ, নিষ্টাবান ও নির্ভীক, যোগ্য, সর্ম্পূন নির্ভরশীল বলিষ্ট নেতৃত্বকে নির্বাচিত করবে।
একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে কিভাবে মুল্যায়ন করবেন ?
সৎ, নিষ্টাবান ও নির্ভীক, যোগ্য, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতামুলক দক্ষ ব্যক্তি হিসেবে থাকতে চাই। এতে উপজেলা পরিষদ শতভাগ জবাবদিহিতাতে পরিপূর্ন থাকবে। সেই প্রেক্ষিতে সাধারণ ভোটাররা বলবে, আমি কতটা যোগ্য এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীতা পাওয়ার। আমি অন্য প্রার্থীদের মত না। নির্বাচন আসলে দলীয় অফিস আর জনগণের দ্বারে দ্বারে ঘুরে! নির্বাচন শেষ তাদের রাজনীতিও শেষ। আ’লীগ যদিও আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। তারপরেও দলীয় সমর্থন ও সাড়া নিয়ে উপজেলা নির্বাচনে মাঠে নেমেছি। উপজেলাবাসীর দোয়া ও সহযোগীতায় উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়ে আছি এবং থাকবো।

সবশেষে উপজেলাবাসীর নিকট দোয়া ও আনারস প্রতীকের ভোট চেয়ে কামরুজ্জামান সুজন বেশকিছু উন্নয়নের কথা তুলে ধরে এ প্রতিনিধিকে বলেন, উপজেলাবাসীর উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন, দেশে-বিদেশে অনুদানসহ কর্মসংস্থান সৃষ্ঠি, ধরলা ভাঙ্গন রোধ, চরবাসীর উন্নয়ন, ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম, গ্রামপুলিশ, সুবিধাভোগীদের তালিকা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ভিজিএফ-ভিজিডি, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, সড়ক নির্মাণ, স্মৃতি সৌধ নির্মাণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা, বসবাসকারী দরিদ্র-ছিন্নমুল পরিবারের জন্য আবাস প্রকল্প স্থাপন ও সামাজিক শক্তি সক্রিয় সুযোগ সৃষ্টিতে অবদান রাখবো।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here