একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে লালমনিরহাটবাসীর আশা ও প্রত্যাশা

0
330

আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাট: নানা চরাই উৎরাই অতিক্রম করে দশম সংসদ মেয়াদ অতিক্রম করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকার। এ সংসদে সীমান্তবর্তি জেলা লালমনিরহাটে বাস্তবায়ন হয়েছে নানা মুখি উন্নয়ন মুলক কর্মকান্ড। আগামী একাদশ সংসদের কাছেও রয়েছে জেলাবাসীর নানান আশা ও বহুমুখী প্রত্যশা।
জানা গেছে, দশম জাতীয় সংসদে লালমনিরহাটের ৩টি সংসদীয় আসনে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ক্ষমতাশীন আওয়ামীলীগের ৩জন সংসদ সদস্য। ছিলেন একজন লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম সংরক্ষিত মহিলা সাংসদও। তাদের প্রচেষ্টায় সম্পন্ন হয়েছে ছোট থেকে মেগা প্রকল্প। পাল্টে গেছে জেলাবাসীর জীবন যাত্রার মান। সচল হয়েছে জেলার অর্থনৈতিক মুক্তির চাকা। জেলার উন্নয়ন পরীকল্পনা প্রনায়নকারী সংসদ সদস্যরা হচ্ছেন, লালমনিরহাট ১ (পাটগ্রাম- হাতীবান্ধা) আসনে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন, লালমনিরহাট ২ (আদিতমারী – কালীগঞ্জ) আসনে রয়েছেন, সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, লালমনিরহাট ৩ (সদর উপজেলা) আসনে রয়েছেন, ইঞ্জিনিয়ার আবু সালেহ মোঃ সাঈদ দুলাল ও সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমী।
সরকারী বিভিন্ন দপ্তর সূত্র জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধিন দশম সংসদের লালমনিরহাট জেলায় বাস্তবায়ন হয়েছে নানান উন্নয়ন মুলক প্রকল্প। প্রস্তাবিত রয়েছে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প। বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলো হল, ১৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৫০ মিটার দীর্ঘ লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলাকে বিভক্ত করা ধরলা নদীতে শেখ হাসিনা ধরলা সেতু ও জেলার কালীগঞ্জ গঙ্গার চওড়ার উপর ১২৩ কোটি টাকা ব্যায়ে গঙ্গা চওড়া শেখ হাসিনা সেতু। বুড়িমারী টু লালমনিরহাট ভাঙ্গা রেল লাইন সংস্কার, আন্তঃনগর করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেন চালু, লালমনিরহাট টু বুড়িমারী মহাসড়কের মরণ ফাঁদ স্বর্নাসতি নদীর উপর ১১কোটি টাকা ব্যায়ে চার লেন বিশিষ্ট স্বর্নামতি সেতু, কালীগঞ্জ ও পাটগ্রাম উপজেলায় ২টি আধুনিক অডিটোরিয়াম, আদিতমারী, কালীগঞ্জ ও হাতীবান্ধা ৩ উপজেলায় তিনটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, ১০০কোটি টাকা ব্যায়ে কালীগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, আদিতমারী ও কালীগঞ্জে দুই উপজেলায় দুটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, ৪২কোটি টাকা ব্যয়ে কালীগঞ্জ মা ও শিশু হাসপাতাল ও শেখ রাসেল শিশু পুনবাসন কেন্দ্র প্রস্তাবিত রয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে লালমনিরহাট নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, প্রতিটি উপজেলায় একটি করে উচ্চ বিদ্যালয়, একটি কলেজ জাতীয় করন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাডেমিক ভবন ও মাল্টিমিডিয়া শ্রেনী কক্ষ, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষন কেন্দ্র (পিটিআই), হাতীবান্ধা কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, লালমনিরহাট সরকারী কলেজে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস প্রভৃতি চোখে পড়ার মত। এছাড়াও গুচ্ছগ্রাম, আবাসন ও আশ্রায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ভুমিহীনদের পুনবাসন, গৃহহীনদের ঘর নির্মান, নতুন বিদ্যুত লাইন স্থাপন, বিনামুল্যে সোলার প্যানেল স্থাপন করে গ্রামীন জনগোষ্ঠীর জীবনমানকে করেছে গতিশীল ও প্রানবন্ত। দুইটি উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স, ৮টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স, ৯টি খাদ্য গুদাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, হাতীবান্ধা থানা ও বড়খাতা পুলিশ ফাঁড়ি ভবন, সার্ভার স্টেশন, জাতীয় গোয়েন্দা অধিদফতর (এনএসআই) ভবন, সিআইডি ভবন, পুলিশ লাইনে ৩০০ শয্যার ব্যারাক, গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নে রাস্তা ঘাট, ব্রীজ-কালর্ভাট নির্মাণ, ১০০ শয্যার সদর হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নতিকরনে ১০তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মান, ৩১ শয্যার ৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীতিকরন, ৭২টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন ও বিনামুল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানসহ বেশ কিছু উন্নমুলক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেছে বর্তমান সরকার। যা লালমনিরহাট জেলার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা পালন করছেন বলে মনে করছে এলাকাবাসী।
আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে লালমনিরহাটবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবী বৃটিশ আমলে নির্মিত লালমনিরহাট বিমান বন্দটি পুনরায় চালু করন, আন্তর্তজাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের পথ সুগম করতে মোগলহাট স্থলবন্দর পুনরায় চালু করন, নদী তীরবর্তি মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাগবে তিস্তা ও ধরলা নদী শাসন করে স্থায়ী বাঁধ নির্মান, রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়নে বুড়িমারী থেকে ঢাকাগামী এক জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালু, জেলা ব্রান্ডিং ফসল ভুট্টার বহুমুখি ব্যবহার ও শিল্পা ল প্রতিষ্ঠা, অগ্রসরমান চা শিল্পের বিকাশে কার্যকরী পদক্ষেপ ও কৃষি প্রধান জেলা হিসেবে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা জেলাবাসীর প্রানের দাবি। এসব দাবি পুরনের সক্ষম নেতা ও নেত্রীকে আগামী একাদশ সংসদের প্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চান লালমনিরহাট জেলার সুশিল সমাজ। একাদশ সংসদের কাছে এটাই জেলাবাসীর প্রত্যশা।
জেলার একমাত্র মন্ত্রী পরিষদের সদস্য লালমনিরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য সমাজ কল্যান প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে সারাদেশের ন্যায় লালমনিরহাটেও অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। কিছু প্রকল্প অপেক্ষামান রয়েছে। আগামী সংসদে পুনরায় আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলে জেলাবাসীর বাকী দাবীগুলো পর্যায়ক্রমে পুরন করা হবে। উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে জেলাবাসীকে আওয়ামীলীগের সাথে থাকার আহবান জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here