উমর আল বশিরের গ্রেফতারের পরও সুদানে বিক্ষোভ অব্যাহত

0
339

খবর ৭১ঃ সুদানের তিন দশকের শাসক সাবেক প্রেসিডেন্ট উমর আল বশিরকে কারাগারে পাঠানো সত্ত্বেও সুদানে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছেন। তাদের আশঙ্কা রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে যে অর্জন হয়েছে তা ‘ছিনতাই’ হয়ে যেতে পারে।

অন্তর্বর্তীকালীন সেনা কাউন্সিল বুধবার জানিয়েছে, বশির ও তার ভাইদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সেনাবাহিনীর অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট উমর আল বশিরকে প্রেসিডেন্ট প্যালেসের গৃহবন্দি অবস্থা থেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এমন ঘোষণাতেও বিক্ষোভকারীরা শান্ত হচ্ছেন না। সুদানের সেন্ট্রাল হাসপাতাল থেকে শতাধিক চিকিৎসক মিছিল নিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেন।

সাংবাদিকরাও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার দাবিতে আলাদাভাবে সুদানের রাজধানী খার্তুমে মিছিল করেছে। বিক্ষোভকারীরা, স্বাধীনতা, শান্তি, ন্যায়বিচার ও জনগণের বিপ্লবের শ্লোগান দেন।
অন্তর্বর্তীকালীন বেসামরিক সরকারের হাতে এখনই ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছে বশির বিরোধী বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেয়া সুদানিজ প্রফেসনালস অ্যাসোসিয়েশন (এসপিএ)। তাদের আশঙ্কা এখনও বশিরের নিয়োগ দেয়া সেনা কর্মকর্তারাই দায়িত্বে রয়েছেন। তাই তারই আশীর্বাদপুষ্ট কেউ ক্ষমতা দখল বা নির্বাচনের মাধ্যমে উত্তরাধিকারী হিসেবে আসতে পারে।

খার্তুমে বিক্ষোভরত ফাদিয়া খালাফ নামে একজন এএফপিকে বলেন, আমাদের উপর টিয়ার গ্যাস ছোড়া হয়েছে। অনেকে কারাগারে আছেন। গুলিতে অনেকে মারা গেছে। সবকিছু যে দাবির জন্য হয়েছে সেটা এখনই পূরণ করতে হবে। আমরা আশঙ্কা করছি বিপ্লব ছিনতাই হয়ে যেতে পারে। তাই আমরা বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছি। যতোক্ষণ না দাবি পূরণ হয় আমরা এখানেই থাকব।

সামরিক কাউন্সিল বলছে, তারা বিক্ষোভকারীদের দাবি অনুযায়ী রাষ্ট্রের তিনজন শীর্ষ পাবলিক প্রসিকিউটরকে সরিয়ে দিয়েছেন। তাছাড়া গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে নতুন একজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারী ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে একজন বেসামরিক প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। তবে আমরা যে কোনো মূ্ল্যে দেশের অভ্যন্তরে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখব।

পশ্চিমা দেশগুলো বিক্ষোভকারীদের সমর্থন জানিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছে। অন্যথায় দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে সংস্থাটি।

এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশর দেশটির সামরিক কর্তৃপক্ষকে সমর্থন দিয়েছে। ২০১১ সালে সুদান থেকে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দক্ষিণ সুদান সংকট সমাধানে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে।

বশিরের বিরুদ্ধে দারফুরে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে রেখেছে। তবে দেশটির সামরিক কর্তৃপক্ষ বলছে তারা বশিরকে কারো হাতে হস্তান্তর করবে না। দেশের মাটিতেই তার বিচার করবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here