খবর ৭১:ভরা বোরো সেচ মৌসুমে আবারও জ্বালানি তেলের তীব্র সংকটে পড়েছে রংপুর বিভাগের ৮ জেলা। এসব জেলায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের একমাত্র জ্বালানি তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান দিনাজপুরের পার্বতীপুর রেলওয়ে হেড ডিপো।
তীব্র সংকটের কারণে চাহিদামতো তেল না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছে দেশের উত্তরের এই ৮ জেলার ৬৬২টি পাম্প মালিক ও এজেন্টরা। তেলের অভাবে ইতিমধ্যেই বেশকিছু পাম্প বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বোরো আবাদ সংকটের মধ্যে পড়েছে।
পাশাপাশি সড়ক পরিবহন খাতও পড়েছে হুমকির মধ্যে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ৪টি তেলবাহী রেকের মধ্যে ৩টি রেক কমিয়ে এখন মাত্র একটি রেক দিয়ে তেল আনায় এ সংকটে পড়েছে দেশের উত্তরের কৃষিনির্ভর ৮ জেলার এই ডিপোটি।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ওয়েল কোম্পানির পার্বতীপুর রেলওয়ে হেড ডিপো ইনচার্জ হেমায়েত উদ্দীন আহমেদ জানান, এই ডিপোর অধীনে রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার ৬৬২টি পাম্প ও এজেন্টগুলোর দৈনিক চাহিদা প্রায় ১৮ লাখ লিটার জ্বালানি তেল।
কিন্তু চলতি মার্চ মাসের ১ তারিখ থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত ১৯ দিনে তারা সরবরাহ পেয়েছে মাত্র প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ লিটার জ্বালানি তেল। এই তেল নিয়ে পাম্প মালিক ও এজেন্টগুলোতে চাহিদা অনুযায়ী তেল সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
ডিপো ইনচার্জ জানান, দৌলতপুরে পর্যাপ্ত জ্বালানি তেল মজুত থাকলেও বাংলাদেশ রেলওয়ে হঠাৎ করেই তেলবাহী রেক (তেলবাহী ট্রেন) কমিয়ে দেয়ায় এই সংকট দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় জোনের বিভাগীয় ট্রান্সপোর্ট অফিসার (ডিটিও) শওকত জামিল জানান, আগে রেলওয়ের ৪টি রেক দিয়ে পার্বতীপুরে তেল পরিবহন করা হতো। কিন্ত এখন একটি নয়, দুটি রেকে তেল সরবরাহ করা হচ্ছে।
হঠাৎ তেলবাহী রেক-এর সংখ্যা কমানো হলো কেন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিটিও শওকত জামিল জানান, সরকারি নির্দেশেই ওই রেকগুলো দিয়ে সিরাজগঞ্জের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানিতে (নওপাজেকো) তেল সরবরাহ করা হচ্ছে।
সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দেয়ার কারণেই সেখানে ওইসব রেক দিয়ে তেল পরিবহন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। আর এ কারণেই পার্বতীপুরে তেলবাহী রেকের সংখ্যা কমানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
দিনাজপুর জেলা পাম্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী জ্বালানি তেল সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, চাহিদা অনুযায়ী তেল না পাওয়ায় গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ইতিমধ্যেই তেলের অভাবে বেশকিছু পাম্প বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভরা বোরো মৌসুমে সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। তেলের অভাবে এই অঞ্চলের সড়ক পরিবহন খাতও সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
খবর ৭১/ ই: