‘ঈদের আগেই খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন’

0
401

খবর ৭১: ঈদের আগেই দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন বলে প্রত্যাশা করছে বিএনপি। বুধবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রত্যাশার কথা জানান।

তিনি বলেন, ঈদ পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে থাকবেন-এটা আমরা মনে করি না। ঈদের আগে অবশ্যই তিনি কারাগার থেকে বেরিয়ে আসবেন। দেশের মধ্যে আইনের যে সিস্টেম আছে তাতে এটাই হওয়া উচিত।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে এখন ৬টা মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো আছে। সেই মামলাগুলো নিয়ে আমরা হাইকোর্টে মুভ করব। আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করেছি। আমরা প্রত্যাশা করছি, আগামী ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যেই ওই সব মামলায় জামিন পাওয়া যাবে।’

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে জড়ানোর কোনো ভিত্তি নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই মামলার সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোনো সম্পর্কই নেই। তিনি জানতেনও না এই ফান্ড আসছে, এই ফান্ড যাচ্ছে। তার কোনো সই পর্যন্ত নেই। ট্রাস্টি বোর্ডে সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’

মির্জা ফখরুল বলেন,‘ নিম্ন আদালতে যে বিশ্বাস ভঙ্গের কথা বলা হয়েছে তা কিন্তু প্রমাণ করতে পারেনি। নিম্ন আদালতে রায় দিয়ে দিয়েছেন। আমরা আশাবাদী উচ্চ আদালতে উনি গেট দ্যা রিলিজ।’

বুধবার সকালে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৪ সদস্যের বেঞ্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট যে জামিন দিয়েছিল, তা বহাল রাখেন। পাশাপাশি ওই দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হাইকোর্টে নিষ্পত্তি করার আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।

দুই মাস আগে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আপিল শুনানির পর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ বুধবার এই রায় দেন। তবে অন্য মামলায় গ্রেফতার থাকায় এখনই খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলছে না বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে এ মামলার রায়ের পর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

গাজীপুর সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খুলনার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে সরকার। সেখানকার জনগণ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অবশ্যই গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে নতুন করে ভাববে বিএনপি। সিদ্ধান্ত নেয়া হবে নতুন করে। আলোচনা হবে দলের সব লেভেলে। কারণ খুলনার নির্বাচনটা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। সব মিলিয়ে আমরা চিন্তা করব।’

গাজীপুরের নির্বাচনে বিএনপি যাবে কিনা এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গাজীপুরের নির্বাচনে যাবো না, এটা আমরা বলছি না। আমরা বলছি যে, এই নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় ও এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব না। এটা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। যাব কি যাব না- বহু রাজনৈতিক কৌশল আছে, বহু রাজনৈতিক প্রশ্ন আছে। সেটা আমরা আলোচনা করে বসে সিদ্ধান্ত নেব।’

খুলনা সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীরা ‘নতুন কৌশল’ নিয়ে ভোট করেছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খুলনায় ক্ষমতাসীনরা যেভাবে নির্বাচন করছে- এটা নতুন কৌশল। কৌশলটা একেবারে নতুন। দৃশ্যত ভালো, সুন্দর, শান্ত। আর ভেতরে সব কিছু গোলমাল। কিভাবে করেছে ভয়ভীতি, ত্রাস সৃষ্টি করে, আইনশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সেখানে একটি ক্ষেত্র তৈরি করেছে তারা।’

বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, খুলনায় সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে ধানের শীষের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু এক লাখ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হতেন। এ সময় বিএনপি চেয়ারপাসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

গুলশানে সাংবাদিকদের সাঙ্গে আলোচনার আগে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানকে দেখতে যান বিএনপি মহাসচিব। তিনি চিকিৎসকদের কাছে তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here