ইরি-বোরো মৌসুমের শুরুতেই কৃষকরা হতাশ, চিলমারীতে ভাসমান তেল ডিপো শূন্যকরে জ্বালানি সংকট তৈরির পায়তারা

0
377

আরিফুল ইসলাম সুজন, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
চলতি ইরি বোরো মৌসুমের শুরুতেই চিলমারীর ভাসমান তেল ডিপো মেঘনা কোম্পানীতে গত দুই মাস ধরে তেল শূন্য থাকায় তেল সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ডিপোটি তেলশূন্য করে জ্বালানী সংকট তৈরীর পায়তারা চালাচ্ছে কোম্পানীর কিছু অসাধু কর্মকর্তা। এ নিয়ে স্থানীয় তেল ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন ফল না পাওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে এ অঞ্চলের ইরি-বোরো মৌসুমে মেঘনা বার্জে দীর্ঘদিন ধরে তেলশূন্য থাকায় ইরি চাষ নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
১৯৮৯ সালে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ভাসমান তেল ডিপো পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তিনটি কোম্পানী কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও লালমনিরহাট জেলায় তেল সরবরাহ করে আসছিল। কয়েক বছরের মাথায় পদ্মা তেল কোম্পানীটি বার্জ মেরামতের অযুহাত দেখিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। এরপর থেকেই মেঘনা ও যমনা ওয়েল কোম্পানী দুটি এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে তেল সরবরাহ করছে। গত কয়েক মাস ধরে মেঘনা কোম্পানী তাদের বার্জ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকায় স্থানান্তরিত করায় তাদের তেল বিক্রি কমে যায়। তেল ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘদিন মেঘনা বার্জটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকায় রাখার কারণে তেল পরিবহনে ব্যারেল প্রতি অতিরিক্ত ২শ টাকা খরচ লাগত। ফলে অপর কোম্পানীর বার্জ থেকে তেল সরবরাহ পরিবহন খরচ কম হওয়ায় আমরা সেখান থেকে তেল উত্তোলন করে আসছি। বিশেষ করে ভুতপূর্ব ডিএস মোল্লা মনির উদ্দিন স্বপরিবারে ঢাকায় বসবাস করায় তার সুবিধার্থে ইচ্ছাকৃতভাবেই কোম্পানীর বার্জটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকায় নোংগর করে তেল বিক্রি শূন্যের কোটায় এনে বার্জটি সরিয়ে নেয়ার   অপচেষ্টায়     লিপ্ত ছিলেন। একই সময়ে ভাল যোগাযোগপুর্ন স্থানে যমুনা ওয়েল কোম্পানীটি স্থানান্তরিত করায় ক্রেতাদের পরিবহন খরচ সাশ্রয় হওয়ার ফলে এ অঞ্চলের জ্বালানী চাহিদা পূরনে হিমশিম খাচ্ছে।
কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও জামালপুর জেলার প্রান্তিক কৃষক, ক্ষুদ্র কৃষক ও ব্যবসায়ীদের জ্বালানী চাহিদা শুধুমাত্র যমুনা ওয়েল কোম্পানীর মাধ্যমে সরবরাহ সম্ভব নয়। উপরোন্ত এ সব অঞ্চলের চরাঞ্চলের কৃষকরা বিদ্যুৎ সুবিধা না থাকায় শুধুমাত্র জ্বালানীর উপর নির্ভরশীল। তাই মেঘনা ওয়েল কোম্পানীটি তেলশূন্য থাকায় সুবিধাভোগীরা তেল সংকটের আশঙ্কা করছেন। তেল ব্যবসায়ী নজির হোসেন জানান, পারবর্তীপুর ও বাঘাবাড়ি থেকে সড়কপথে তেল পরিবহন করলে লিটারপ্রতি ৮-১০ টাকা বেশি খরচ হয়। তাই জনগণের সুবিধার্থে তেলের মুজদ বাড়িয়ে এ অঞ্চলে জ্বালানী তেলের সংকট নিরসন করা দরকার। এ ব্যাপারে মেঘনা ওয়েল কোম্পানীর ডিএস আবু সাঈদ জানান, উর্ধতন কর্তৃপক্ষ তেল সরবরাহ করলে বিতরনে কোন বাধা নাই। কোম্পানীর এজিএম (সাপ্লাইয়ার ও ডিস্ট্রিবিউশন বিভাগ) টিপু সুলতান জানান, নদীর নাব্যতা না থাকায় তেল ভর্তি জাহাজ পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। মেঘনা ওয়েল কোম্পানীর ডিজিএম মীর সাইফুল্লাহ আল খায়ের জানান, তেল ধারণকরা বার্জটিতে ছিদ্র দেখা দেয়ায় মেরামত করে তেল সরবরাহ করা হবে।
মেঘনা কোম্পানীর শীর্ষ কর্মকর্তাগণের ত্রি-মূখী বক্তব্যে চলতি ইরি-বোরা মৌসুমে কুড়িগ্রামসহ চার জেলায় জ্বালানী তেল সংকট তৈরীর মাধ্যমে চিলমারীর ভাসমান তেল ডিপো মেঘনা কোম্পানীকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করার পায়তারা চালাচ্ছে বলে স্থানীয় অভিজ্ঞ মহলের ধারনা।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here