ইমরুলের ব্যাটে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

0
322

খবর৭১ঃদুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন ইমরুল কায়েস। তার ব্যাটে ভর করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ দল। দুই ম্যাচে ২৩৪ রান করেন কায়েস।

বুধবার চট্টগ্রাজ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৪৬ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। জবাবে খেলতে নেমে ৪৪.১ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ দল।

প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ঢাকায় ১৪৪ রান করেন ইমরুল কায়েস। বুধবার চট্টগ্রামেও দুর্দান্ত খেলেছেন এ ওপেনার। ভালো খেলা সত্ত্বেও আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে। মাত্র ১০ রানের জন্য ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করতে পারেননি কায়েস।

শুধু কায়েসই নন, অসাধারণ খেলা সত্ত্বেও ১৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন ওপেনার লিটন দাস।

জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৫ রান করেন ব্রান্ডন টেইলর। বাংলাদেশ দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন সাইফউদ্দিন।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইমরুল কায়েস ও লিটন দাসের সৌজন্যে উড়ন্ত সূচনা করে বাংলাদেশ দল। উদ্বোধনী জুটিতে ১৪৮ রান সংগ্রহ করে দলের জয়ের পথ সহজ করে দেন লিটন-কায়েস।

ইনিংসের প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল লিটন দাসের। আম্পায়ার এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দিলে রিভিউ নেন লিটন। ভাগ্য ফেবারে থাকায় লাইফ পান তিনি। শূন্য রানে লাইফ পেয়ে ৪৮ বলে পূর্ণ করেন ফিফটি। এরপর সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন। কিন্তু একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন এ ওপেনার। সাজঘরে ফেরার আগে ৭৭ বলে ১২ চার ও এক ছক্কায় করেন ৮৩ রান।

ভালো শুরুর পরও তিন নম্বর পজিশনে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ফজলে মাহমুদ রাব্বি। আগের ম্যাচে ৪ বলে শূন্য রানে আউট হওয়া ফজলে রাব্বি স্টাম্পিং হওয়ার আগে খেলেন ৫ বল।

মিরপুরে অভিষেক ম্যাচে ব্যাটে বলে ব্যর্থ রাব্বিকে চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে খেলানোর আগে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। তবে ফজলে রাব্বির কাঁধে হাত রেখে অধিনায়ক বলেছেন, একটা ম্যাচ দিয়ে কারো পারফরম্যান্স বিচার করা ঠিক নয়। অধিনায়কের কাছ থেকে অভয় পেয়েও প্রত্যাশিত পারফর্ম করতে পারেননি ফজলে রাব্বি। এদিনও ফেরেন শূন্য রানে।

এরপর মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে ৫৯ রানের জুটি গড়েন ইমরুল কায়েস। এই জুটির পথে ২৫ রান করার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফর্মেটে ১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন মুশফিক।

তবে সেঞ্চুরি পথে থাকা কায়েস বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সিকান্দার রাজার বলে চিগুম্বরার হাতে ক্যাচ তলে দেন। ইনিংসের শুরু থেকে অসাধারণ খেলে যাওয়া এ ওপেনার ফেরেন ১১১ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৯০ রান করে।

ইমরুলের বিদায়ের পর মোহাম্মদ মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন মুশফিক। ৪০ ও ২৪ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন মুশফিক ও মিঠুন।

জিম্বাবুয়ে ২৪৬/৭

তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে দাপুটে জয়ে ১-০তে এগিয়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় টাইগাররা। সেই লক্ষ্যে বেশ ভালোভাবে কাজ সারলেন বোলাররা। শেষটা দুর্দান্ত করে প্রতিপক্ষকে মাত্র ২৪৬ রানে আটকে রাখলেন তারা।

এ ম্যাচে বড় নিয়ামক হতে পারে শিশির। এটিই পার্থক্য গড়ে দিতে পারে দুদলের। তাই বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিং নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। প্রথমেই তার সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক প্রমাণ করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। শুরুতেই দলকে সাফল্য এনে দেন তিনি। হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি করে ফেরান প্রতিশ্রুতিশীল ও সম্ভাবনাময়ী এ ক্রিকেটার।

মাঝের গল্পটা শুধু সফরকারীদের। ১৮ রানেই মাসাকাদজাকে হারিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খায় তারা। পরে ব্রেন্ডন টেইলরকে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠেন সিফাস জুওয়াও। দুর্দান্ত খেলছিলেন এ জুটি। প্রতি ওভারে পাঁচের ওপরে রান তুলছিলেন তারা। ধীরে ধীরে চোখ রাঙাতে থাকেন টেইলর-জুওয়াও। তবে তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান মেহেদী হাসান মিরাজ। দলীয় ৭০ রানে ফজলে মাহমুদের ক্যাচ বানিয়ে জুওয়াওকে (২০) ফেরান তিনি।

কিন্তু থেকে যান টেইলর। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন শন উইলিয়ামস। তাদের ব্যাটে ছুটছিল জিম্বাবুয়ে। এতে নেতৃত্ব দেন টেইলরই। অবশেষে থামে তার চোখরাঙানি। দলীয় ১৪৭ রানে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ক্যারিয়ারের ৩৫তম ফিফটি তুলে নেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত ৭৩ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৭৫ রানের দর্শনীয় ইনিংস খেলে ফেরেন টেইলর। তার বিদায়ে ভাঙে ৭৭ রানের জুটি।

সহযোদ্ধা হারিয়ে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি উইলিয়ামস। প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনিও। আবারো শিকারি সাইফউদ্দিন। দুর্দান্ত কাটারে উইলিয়ামসকে (৪৭) মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তিনি।

পরে ক্রিজে আসেন সিকান্দার রাজা। ধীরে ধীরে সেট হয়ে যান তিনি। এক পর্যায়ে ব্যাটে ছোটাতে থাকেন রানের ফোয়ারা। তাতে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। তবে হঠাৎই খেই হারান রাজা। মাশরাফির শিকারে পরিণত হন তিনি। মাত্র ১ রানের জন্য ফিফটি বঞ্চিত হন এ মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান। তখন পর্যন্ত ইনিংসের নাটাই ছিল জিম্বাবুয়ের হাতে।

তবে খানিক বাদে মুরকে মিরাজের তালুবন্দি করে উইকেটের খাতা খোলেন মোস্তাফিজুর রহমান। অল্প ব্যবধানে চিগুম্বুরাকে সাইফ ফেরালে হঠাৎ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় জিম্বাবুয়ে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৪৬ রান তুলতে সক্ষম হয় লালচাঁদ রাজপুতের দল।

এদিন বাংলাদেশের সেরা বোলার সাইফউদ্দিন। ১০ ওভারের কোটা পূরণ করে ৪৫ রান খরচায় ১ মেডেনসহ ৩ উইকেট নেন তিনি। এছাড়া মাশরাফি, মোস্তাফিজ, মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহর শিকার ১টি করে উইকেট।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here