আ.লীগের ‘গণতন্ত্রকামীদের’ ঐক্যে ডাকলেন খালেদা জিয়া

0
276

খবর৭১: আওয়ামী লীগ দেশে স্বৈরশাসন কায়েম করলেও দলটিতে বহু গণতন্ত্রকামী রয়েছে বলে মনে করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আর এই ‘গণতন্ত্রকামীদেরকে’ জাতীয় ঐক্যে ডেকেছেন তিনি।

দুর্নীতি মামলার রায়ের আগের বুধবার বিকালে গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেত্রী এই আহ্বান জানান।

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায় সরকারের আমলে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে কুয়েত থেকে আসা দুই কেটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন।

প্রায় ১০ বছর পর ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রায়ের দিন ঠিক হয় গত ২৫ জানুয়ারি। পুরান ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করবেন।

খালেদা জিয়ার দাবি, তিনি কোনো দুর্নীতি বা অন্যায় করেননি। ন্যায়বিচার হলে এই মামলায় তিনি খালাস পাবেন। তবে এই ন্যায়বিচার পাবেন কি না, সে আশঙ্কার কথাও সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

সংবাদ সম্মেলনে সরকারের বিরুদ্ধে অপশাসন, বেপরোয়া দুর্নীতি ও বিচারহীনতার অভিযোগ তুলে ধরা হয়। খালেদা জিয়া বলেন, ‘তথাকথিত উন্নয়নের নামে শোষণ, বঞ্চনা, লুটপাট ও অত্যাচারের এক দুঃসহ দুঃশাসন আজ জনগণের বুকের ওপর চেপে বসেছে। এই স্বৈরশাসন জনগণকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।’

অতীতে এই রকমের পরিস্থিতিতে ছাত্র-যুবক, তরুণেরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে আবারও এমন ঐক্যের আহ্বান জানান খালেদা জিয়া।

বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাষ্ট্রভাষা বাংলা। সৈনিক, ছাত্র-জনতার মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা। এই ছাত্র-জনতা আন্দোলনেই স্বৈরাচার পরাজিত হয়েছে।’

‘আজ গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সেই ছাত্র, জনতাকে আহ্বান জানাই এগিয়ে আসতে। বিএনপি, ২০ দলসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক দল, কৃষক শ্রমিকসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে আমি বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগেও অনেকে আছেন যারা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করেন এবং ভবিষ্যত পরিণতির কথা ভাবেন। তাদের প্রতিও আমার একই আহ্বান রইল।’

সরকারের বিরুদ্ধে অপশাসন কায়েমের অভিযোগ করে বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘অন্যায়-অবিচার ও শোষণ-বঞ্চনা-লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সকল পথ এরা বন্ধ করে দিয়েছে ‘

‘হামলা-মামলা, গ্রেপ্তার ও জেল-জুলুম চালিয়ে প্রতিবাদী সব কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দেয়া হচ্ছে। গণতন্ত্রেও লক্ষ কর্মী আজ মানবেতর জীবনযাপন করছে। অপহরণ, গুম, খুনের এক ভয়াবহ বিভীষিকায় বাংলাদেশ আজ ছেয়ে গেছে। ঘরে ঘরে আজ হাহাকার। স্বজন হারানো কান্নার রোলে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।’

খালেদা জিয়া দাবি করেন, তারা সন্ত্রাসে বিশ্বাস করেন না। কিন্তু সারা দেশে প্রকাশ্যে সন্ত্রাস করছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না। তাদের কোনো বিচার হয় না।

এই মামলায় ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা করে নেতা-কর্মীদের বুঝেশুনে চলার পরামর্শ দেন বিএনপি নেত্রী। নেতা-কর্মীদেরেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামীতে অনেক ফাঁদ পাতা হবে, অনেক ষড়যন্ত্র হবে, সবাই সাবধান ও সতর্ক থাকবেন। বুঝে-শুনে কাজ করবেন।’

বিএনপি সংঘাত, হানাহানি, নৈরাজ্য চায় না জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এখনো আমরা আশা করে বসে আছি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে।’

‘সেই প্রত্যাশা রেখেই আহ্বান জানাই, হুমকি-ধামকি ও নির্যাতনের পথ ছেড়ে আসুন, আমরা আলোচনার মাধ্যমে শান্তির পথে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করি।’
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here