চৌগাছা (যশোর) আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যশোরের চৌগাছা উপজেলাতে চলছে নিরুত্তাপ প্রচার প্রচারনা। প্রার্থীদের গনসংযোগ আর প্রচার মাইক থাকলেও ভোটারদের মাঝে এর কোন প্রভাব পড়েনি। শুধু মাত্র একটি দল এই নির্বাচনে অংশ নেয়া ও সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতিয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে না পারায় হচ্ছে মুল কারন বলে ভোটারদের সাথে বলা জানা গেছে। তবে এই নির্বাচনে উপজেলার বিএনপি জোটের ভোটারদের বেশ কদর বেড়েছে বলেও বিভিন্ন এলাকাতে চাউর হচ্ছে।
সূত্র জানায়, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সীমান্তবর্তী চৌগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে অন্য কোন দল অংশ না নিলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামীলীগ বনাম আওয়ামীলীগ। দুইজন চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৭ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ৫ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলে মোট প্রার্থীর সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৪ জনে। ইতোমধ্যে গোটা উপজেলাতে প্রচার হচ্ছে এই নির্বাচন অংশ গ্রহন মুলক নির্বাচন হবে না। কারন দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি ও তার মিত্ররা এই নির্বাচন বয়কট করেছেন। যে কারনে নির্বাচন হচ্ছে আওয়ামীলীগ বনাম আওয়ামীলীগ। নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর হতে শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারনা। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলছে প্রচার প্রচারনা, কিন্তু আজও ভোটারদের মাঝে নির্বাচন নিয়ে কোন আগ্রহ সৃষ্ঠি হয়নি। গতকাল উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের সাথে কথা বলে এটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এই নির্বাচনে অংশ নেয়া ১৪ প্রার্থী নিরালস ভাবে হাট বাজার, গ্রাম, পাড়া মহল্লায় ভোট প্রার্থনায় ছুটছেন কিন্তু সাড়া দিচ্ছে না ভোটাররা, সৃষ্টি হয়নি কোন উত্তাপ। বলাচলে নিরুত্তাপ প্রচার প্রচারনার মধ্য দিয়ে শেষ হতে যাচ্ছে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন নির্বাচনে দলীয় সমার্থন পেতে ব্যর্থ হয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অনেকে বলেন চৌগাছা আওয়ামীলীগের কান্ডারী বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম হাবিবুর রহমান। তার গোটা উপজেলাতে আছে নির্দিষ্ঠ একটি ভোট ব্যাংক। তিনি দলের সমার্থন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন নির্বাচনে। দল তাকে সমার্থন না দেয়ায় এর প্রভাব পড়েছে তৃণমুলের নেতাকর্মীদের মাঝে। পক্ষান্তরে নৌকার টিকিট নিশ্চিত করা প্রার্থী কলেজ অধ্যক্ষ ড.এম মোস্তানিছুর রহমান নির্বাচনী মাঠে বলাচলে নতুন মুখ। তিনি এর আগে কখনও এ ধরনের নির্বাচন করেননি। ফলে তাকে তৃণমুল নেতাকর্মীদের সমার্থন আদায় করতেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। একদিকে দলীয় প্রতীক নৌকা অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত নেতার দখলে অন্য দিকে দলের কান্ডারী বলে খ্যাত সেই এসএম হাবিব বিদ্রোহী প্রার্থী। এই দুয়ে মিলে চরম দ্বিধাদ্বন্দ্বে চৌগাছা আওয়ামীলীগ। অনেক নেতাকর্মী আসন্ন নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানা গেছে। অনেকে দায় এড়াতে একটু আগে ভাগেই আবার বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ফলে ৩১ তারিখের নির্বাচনে খোদ আওয়ামীলীগের ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়া নিয়েও দেখা দিয়েছে শংকা। অপর দিকে গত ৩০ ডিসেম্বর এজনপদের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারায় ভিতরে ভিতরে তুষের আগুনের মত পুড়ছে। এ সব ভোটাররা বলছেন, সংসদ নির্বাচনে যেখানে ভোট দিতে পারেনি সেখানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দেয়ার প্রশ্নই উঠেনা। যারা সেদিন ভোট দিয়ে বাক্্র ভরেছিল তারাই ভোট দিবে আমরা দাড়িয়ে দেখবো। এদিকে নির্বাচনী লড়াই যখন আওয়ামলীগ বনাম আওয়ামীলীগ হচ্ছে তখন অন্য দলের ভোটারদের কদর বেশ বেড়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। প্রার্থীরা এখন শুধু আওয়ামীলীগের সামার্থন না বিরোধী মতের ভোটারদের সমার্থন নিতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। তবে শেষমেষ তাদের এই কষ্ট কতটুকু সমার্থক হবে তার জন্য সকলকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। উপজেলার সচেতন মহল মনে করছেন, ভোট হচ্ছে এক দলের মধ্যে। অন্য কোন দল অংশ না নেয়ায় এই নির্বাচন একপেশে হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। যার কারনে প্রচার প্রচারনা চললেও সাধারণ ভোটারদের মাঝে কোন সাড়া পড়েনি।
খবর৭১/এসঃ