খবর৭১ঃবঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, আমি বিএনপিতে যোগদান করি নাই। কামাল হোসেনের ঐক্যফ্রন্টে যোগদান করেছি। শেখ হাসিনাকে পরাজিত করতে হলে বিএনপিকে ভুলে যান। যদি জয়ী হতে চান বিএনপিকে ভুলে যান।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আপনারা গাবতলীর রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। রাস্তায় বাস বন্ধ করে দিয়েছেন তারপরেও আমি আপনাদের বলতে চাই এখানে এসে দেখে যান মানুষের জন সমুদ্র কতো।
তিনি বলেন, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কথার কোনো দাম নেই। দালালের কথায় কোনো লাভ নেই।
বঙ্গবন্ধুর নাম নিয়ে বক্তব্য শুরু এবং জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বক্তব্য শেষ করলেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। বক্তব্যের শুরুতে ড. কামাল হোসেনের পরিচিত করাতে গিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যাকে সাথে নিয়ে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতেন, আইন পরামর্শ নিতেন সেই ড. কামাল উপস্থিত রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিল সেই আসম আব্দুর রব উপস্থিত রয়েছেন।
তিনি বলেন, এই সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যেখানে দাড়িয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতার সংগ্রামের লক্ষে বক্তব্য দিয়েছিলেন। এই সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যেখানে পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। মুক্তির সংগ্রামের লক্ষ্যে সারা বাংলার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে মানুষের আশা আকাঙ্খা ফিরিয়ে আনবো।
চট্টগ্রামের কালুরঘাটের বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা প্রথমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামেই দেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
সৈয়দ ইব্রাহিম বলেন, ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামের কালুরঘাত বেতার কেন্দ্র থেকে প্রথমে বঙ্গবন্ধুর নামে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া হয়। পরে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বেগম জিয়াকে সরকার জেলের মধ্যে মেরে ফেলতে চায়। কিন্তু আমরা এটা হতে দেবো না। জান যাবে, জীবন দেবো- কিন্তু খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো।
নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন সরকারে শেখ হাসিনা থাকতে পারবেন না। শেখ হাসিনা ও বর্তমান ইসির অধিনে কোন নির্বাচন হবে না। সংসদ বাতিল করতে পারবো। দাবি না মানলে, রাজপথে দাবি আদায় করবো।
মান্না বলেন, ৫ বছরে সরকার ভোটের নামে ভোট চুরি করেছে। ৫ জানুয়ারি ভোট কেন্দ্রে ভোটার ছিল না। সামনে নির্বাচন। মাত্র ২ মাস সময় আছে। মানুষ বলে এবার কী ভোট দিতে পারবো।
তিনি বলেন, আমরা ভালো মানুষ। ড. কামাল আন্তর্জাতিক আইনজীবী বিজ্ঞ। সংলাপের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন ড. কামাল। তিনি সংলাপে ৭ দফা দাবির কথা বলেছেন। কিন্তু ৭ দফার একটাও মানা হয়নি।
মান্না আরো বলেন, গণতন্ত্র চাই, সন্ত্রাস চাই না, আগুন সন্ত্রাস চাই না।
সংলাপের বিষয়ে তিনি আরো বলেন, প্রথম দফা সংলাপে মুখে মুখে অঙ্গিকার করেছে। এবার লিখিত অঙ্গিকার করতে হবে। যেদিন অঙ্গিকার করা হবে, তার পরে থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে।
দেখা গেছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হাদদদ বিএনপি এবং এর অঙ্গ- সহযোগি সংগঠন, ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রায় ১ লাখ নেতাকর্মীরা উপস্থিত রয়েছে। অনেকে পায়ে হেঁটে আবার অনেকেই বাসে করে এসে জনসভায় যোগ দিয়েছে।
এদিকে ঐক্যফ্রন্টের জনসভাকে কেন্দ্র করে শাহবাগ মোড়, মৎস্য ভবন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে কঠোর নিরাপত্তার বলর গড়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদেরও দেখা গেছে।
অপরদিকে শাহবাগ মোড়, শিল্পকলা একাডেমীর সামনে ছোট ছোট ব্যানার নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির ও এর অঙ্গ-সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া অনেকেই রমনা পার্কের ভিতরেও অবস্থান নিয়েছে।
এর আগে সকাল পৌনে ১২ টা থেকে বিএনপির সংগঠন জাসাসের নেতৃত্বে জনসভায় গান পরিবেশন করা হয়। জনসভা শুরুর আগ পর্যন্ত এই গান পরিবেশন করা হয়।
জনসভায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সুব্রত চৌধুরী, আব্দুল মালেক রতন, তানিয়া রব, নুরুল আলম বেপারীসহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, জয়নাল আবেদীন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, আমান উল্লাহ আমান, সৈয়দ মোয়াজ্জম হোসেন আলালসহ জনসভায় প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
২০ দলীয় জোট নেতা মাওলানা নূর হোসেন কাসেমী, আন্দালিব রহমান পার্থ, সৈয়দ মুহাম্মাদ ইবরাহিম, মোস্তফা জামাল হায়দার, রেদোয়ার আহমেদ, আব্দুল লতিফ নিজামী, আহমেদ আব্দুল কাদের সভায় বক্তব্য রাখেন।
খবর৭১/ইঃ