খবর৭১: হাসপাতালের ঘর। বিছানায় বসে ক্রমাগত পা ছুড়ছে বছর দশেকের একটি ছেলে। চিৎকারও করে চলেছে একনাগাড়ে। তার দু’চোখে সাদা পট্টি। একটা হাতেও ব্যান্ডেজ লাগানো। সে এতটাই অস্থির যে, তার গা থেকে প্রায় খুলে পড়ে যাচ্ছে হাসপাতালের নীল পোশাক।
তাকে কোলে নিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছেন এক ব্যক্তি। ছেলেটিকে কোলে করে ঘুরছেন তিনি। কিছু বলারও চেষ্টা করছেন। কিন্তু ছেলেটি শুধুই চিৎকার করে কাঁদছে, পা ছুড়ছে আর বলেছে, ‘‘আমার চোখ। বাবা আমার চোখ কই।’’
এক মিনিট এগারো সেকেন্ডের এই ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে খুব সম্প্রতি। যা দেখে শিউরে উঠেছেন গোটা বিশ্বের নেটিজেনরা।
একটি ওয়েবসাইট দাবি করেছে, ছেলেটির নাম আবদুল মুয়াইন। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ার হোমসের বাসিন্দা ছিল সে। কিন্তু দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ায় আরও অনেক সিরীয় পরিবারের মতোই ভিটে ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় আবদুলের পরিবার। তার পর থেকে তুরস্ক সীমান্তের কাছে আফরিন প্রদেশে থাকা শুরু করে আবদুলরা।
রমজান মাসের প্রথম দিন বাড়ির সামনেই খেলছিল আবদুল। সেখানেই রাস্তায় পোঁতা একটি ল্যান্ডমাইন ফেটে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। নষ্ট হয়ে যায় তার চোখ দু’টি। শরীরের অন্যত্রও আঘাত লেগেছিল। হাসপাতালে যখন জ্ঞান ফেরে, সে বুঝতে পারে সে কিছু দেখতে পাচ্ছে না। আতঙ্ক আর অসহায়তায় চিৎকার করে ওঠে। তার বাবা তাকে ক্রমাগত শান্ত করার চেষ্টা করলেও আবদুল শুধু বলতে থাকে, ‘‘বাবা আমার চোখ, আমার চোখ।’’
পরে অবশ্য ওই ওয়েবসাইটটি জানিয়েছে, আপাতত তুরস্কের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে খুদে আবদুলের। সেখানে সফল হয়েছে তার দু’চোখের অস্ত্রোপচারও। ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি ফিরেও পাচ্ছে সে।
খবর৭১/জি: