আফগানিস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে

0
470

খবর৭১:মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম এক অস্থিতিশীল দেশ আফগানিস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। ২০০১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান শাসন পতনের পর দেশটিতে এবার নিয়ে তৃতীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন হচ্ছে।

শনিবার (২০ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে সাত হাজার ভোটকেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা থাকলেও শেষপর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার ভোটকেন্দ্রে ভোটাভুটি হচ্ছে।

তালেবানরা এই নির্বাচন বর্জনে ভোটারদের প্রতি আহবান জানিয়েছে। একই ধরনের আহবান জানিয়েছে, আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিরা।

নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৫৪ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনের ২০ দিন পর আগামী ১০ নভেম্বর প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করা হবে ধারণা করা হচ্ছে।

৮ বছর পর, আফগানিস্তানে ওলেসি জিরগা বা পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নির্বাচন। ২৪৯ আসনের জন্য লড়ছেন, ২ হাজার ৫৬৫ প্রার্থী। সাড়ে ৩ কোটি মানুষের দেশটিতে ভোটার, ১ কোটি ৪০ লাখ।

শনিবারের (২০ অক্টোবর) নির্বাচনে, আড়াই হাজার প্রার্থীর বেশিরভাগই স্বতন্ত্র। ক্ষমতাসীন সরকারের শরীক- পিপলস ইসলামিক ইউনিটি পার্টি অব আফগানিস্তান, ন্যাশনাল ইসলামিক মুভমেন্ট অব আফগানিস্তান এবং জমিয়াত-ই-ইসলামির প্রার্থীরাও আছেন নির্বাচনি মাঠে। লড়ছেন রেকর্ড চারশ নারীপ্রার্থী।

এবারের নির্বাচনেও বড় চ্যালেঞ্জ, তালেবানি তৎপরতা। তালেবান জঙ্গিরা শুরু থেকেই এ নির্বাচন বানচালের হুমকি দিয়ে আসছে। প্রচারণাভিযানে নেমেই জঙ্গি হামলায় প্রাণ গেছে ১০ প্রার্থীর।

৩৪ প্রদেশের মধ্যে ৯ টির নিয়ন্ত্রণ তালেবানের। আর ৩৯৮ জেলার ২২৯ টি সরকারি নিয়ন্ত্রণে, ৫৯ টি তালেবান ও অন্য বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত। ১১৯ টির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে, সরকার ও বিদ্রোহীদের আছে বিরোধ।

তালেবান অধুষ্যিত ৯শ কেন্দ্রেই ভোট হচ্ছে না। নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আরও ৩ হাজার কেন্দ্র।

তালেবান, হাক্কানি নেটওয়ার্কসহ অন্য জঙ্গিরা চেষ্টা করবে, নির্বাচন বানচাল করতে। তারপরও সবাই আশাবাদি, জনগণ সাচ্ছন্দেই ভোট দিতে আসতে পারবে।

আগের নির্বাচনে উপজাতি নেতাদের আধিপত্য থাকলেও, এবার তরুণরাই এগিয়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জয়-পরাজয় নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে, প্রত্যন্ত এলাকার ভোট। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকায় এখনো তালেবানি ভাবাদর্শের প্রভাব রয়েছে। এটি চিন্তার বিষয়।

৪০ বছর ধরে, ঘুরেফিরেই সংঘাতের মুখে আফগানিস্তান। পশ্চিমা ধাচের গণতান্ত্রিক নির্বাচন, এখানে অকল্পনীয় হলেও, নতুন দিনের স্বপ্নে বিভোর দেশটির সাধারণ মানুষ।

আফগানিস্তানে ২০০১ সালে সামরিক অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্র। ওই বছর ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে হওয়া জঙ্গি হামলার জন্য আল-কায়েদাকে দায়ী করে তাদের নির্মূল করতে আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে পশ্চিমা দেশটি। মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটিতে আজও মার্কিন সেনা উপস্থিতি আছে, সেই সঙ্গে আছে অস্থিতিশীলতাও। আফগানরা নির্বাচনের মাধ্যমে সে অস্থিতিশীলতার অবসান চায়।
খবর৭১/জি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here