আফগানিস্তানের বিপক্ষে স্বস্তির জয় পেল বাংলাদেশ

0
216

খবর ৭১ঃ তুলনামূলক ভালো ব্যাটিংয়ের পর টাইগারদের চেপে ধরা বোলিংয়ে হার মানতে বাধ্য হয় আফগানিস্তান। তাতে টানা দুই হারের পর স্বস্তির জয় পেল বাংলাদেশ। ম্যাচ সেরা হয়েছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

২৫০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২৬ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারায় আফগানিস্তান। ওপেনার এহসানউল্লাহ ৮ রান করে কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানের শিকার হন। রহমত শাহ ১ রান করে রান আউটের ফাঁদে পড়েন।

দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া আফগানিস্তানকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদ ও হাসমতউল্লাহ শাহিদি। নিজেদের পরিকল্পনায় সফল হয়েছেন তারা। ধীরলয়ে খেলে ১০৪ বলে ৬৩ রান যোগ করেন তারা।

শেহজাদকে থামিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন অফ-স্পিনার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৫৩ রানে মাহমুদুল্লার বলে থামেন শেহজাদ। তার ৮১ বলের ইনিংসে ৮টি চার ছিলো।

দলীয় ৮৯ রানে শেহজাদ ফিরে যাবার পর আবারো বড় জুটি চেষ্টা করেন শাহিদি ও অধিনায়ক আসগর আফগান। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তোলার চেষ্টা করেন তারা। এতে ৩৮তম ওভারে দেড়শ রান কোটা স্পর্শ করে আফগানিস্তান।

৪০তম ওভারের চতুর্থ বলে আসগরকে বিদায় দিয়ে জুটি ভাঙ্গেন বাংলাদেশ দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। ২টি চারে ৪৭ বলে ৩৯ রান করেন আসগর। চতুর্থ উইকেটে ৯০ বলে ৭৮ রান যোগ করেন শাহিদি ও আসগর। এই জুটি গড়ার পথে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ও চলমান টুর্নামেন্টে টানা তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন শাহিদি।

আসগরকে শিকার করার কিছুক্ষণ পর শাহিদিকেও তুলে নেন মাশরাফি। ৫টি চারে ৯৯ বলে ৭১ রান করেন শাহিদি। শাহিদি যখন ফিরেন তখন জয়ের জন্য ৩৯ বলে ৫৮ রান প্রয়োজন ছিলো আফগানিস্তানের। উইকেট হাতে ছিলো ৫টি।

এ সময় সামিউল্লাহ শেনওয়ারির সাথে মারমুখী মেজাজে ৩০ বলে ৪৬ রান দলকে উপহার দেন আফগানিস্তানের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী। ফলে শেষ ২ ওভারে ১৯ রান দরকার পড়ে আফগানদের। ৪৯তম ওভারে সাকিবের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরেন নবী। তবে পরের বলেই নবীকে থামান সাকিব। ২টি করে চার ও ছক্কায় ২৮ বলে ৩৮ রান করেন নবী। ফলে শেষ ওভারে ৮ রান দরকার পড়ে আফগানিস্তানের।

ম্যাচের শেষ ওভার মুস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন টাইগার অধিনায়ক। প্রথম ডেলিভারি থেকে ২ রান নেন রশিদ খান। পরের বলেই রশিদকে নিজের হাতেই তালুবন্দি করেন ফিজ। এরপর তৃতীয় বলে ১, চতুর্থ বলে শুন্য ও পঞ্চম বলে ১ রান দিয়ে শেষ ডেলিভারিতে আফগানিস্তানের ৪ রান প্রয়োজন দাড় করান মুস্তাফিজুর। নিজের শেষ ডেলিভারি থেকে কোন রানই দেননি ফিজ। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ২৪৬ রানে থেমে যায় আফগানরা। ৩ রানে ম্যাচ জিতে টুর্নামেন্টে নিজেদের আশা বাঁচিয়ে রাখে বাংলাদেশ।

ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে মাশরাফি-মুস্তাফিজ ২টি করে এবং সাকিব-মাহমুদুল্লাহ ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাংলাদেশের মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ।

এরআগে ঢাকা থেকে উড়ে যাওয়া ইমরুল কায়েস ও মাহমুদুল্লাহর দুর্দান্ত পার্টনারশিপে আফগানিস্তানকে ২৫০ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। রবিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ের কবলে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। সেখান থেকে ১২৮ রানের পার্টনারশিপ গড়ে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং স্কোর এনে দেন ইমরুল-রিয়াদ।

দলীয় ৮৭ রানের সময় মাঠে নেমে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ করেন ৭৪ রান। অন্যদিকে রিয়াদের মতোই দলের হয়ে ৭২ রান করে অপরাজিত থাকেন ইমরুল কায়েস। দলের প্রথম ভাগের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ইমরুল ও সৌম্য সরকারকে দুবাইয়ে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সৌম্য একাদশে না থাকলেও নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন ইমরুল।

দলীয় ২১৫ রানের মাথায় মাহমুদুল্লাহ আউট হয়ে গেলে ব্যাট হাতে নামেন দলীয় অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তিনি ইমরুলকে সঙ্গ দিয়ে তোলেন ১০ রান। মাশরাফির আউট হয়ে গেলে মাঠে নামেন মেহেদী মিরাজ। তিনি সংগ্রহ করেছেন ৫ রান।

এর আগে দলীয় ১৬ রানের মাথায় ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর (৬) উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। দুই রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফিরেন ওয়ান ডাউনে নামা মোহাম্মদ মিঠুনও (১)।

এরপর মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস তৃতীয় উইকেট জুটিতে কিছুটা দৃঢ়তা দেখান। দুজনে মিলে ৬৩ রানের জুটি গড়েন। পরে অবশ্য লিটন ৪১ এবং মুশফিক ৩৩ রান করে সাজঘরে ফিরেন। দ্রুত ফিরে যান সাকিব আল হাসানও (০)।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here