আওয়ামীলীগ নেতা ও চেয়ারম্যান সবুজের কর্মকান্ডে সমালোচনার ঝড়

0
264

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর)ঃ যশোরের চৌগাছায় ঈদ উপলক্ষে গরীব দুস্থ্যদের মাঝে বিতারণকৃত ভিজিএফ এর চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান। এমপি সাহেব ঘটা করে ওই চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে চাল বিতারণ কার্যক্রম উদ্বোধনের পরের দিনই আত্মসাতের পরিকল্পনা করেন ওই নেতা। প্রায় ১শ বস্তা চাল কালোবাজারে বিক্রির লক্ষে চৌগাছা বাজারে আনার পথে সাধারণ মানুষ তা হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরবর্তীতে থানা পুলিশ খবর পেয়ে সমুদয় চাল জব্দ করে থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় গোটা উপজেলা জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
জানা গেছে, সরকার পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ভিজিএফ এর মাধ্যমে সারা দেশে গরীব দুস্থ্যদের মাঝে বিনামূল্যে মাথাপিছু ২০ কেজি করে চাল বিতারনের সিদ্ধান্ত নেয়। সে লক্ষে চৌগাছা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় মোট ৪৯ হাজার ৮শ ১৬ জন কার্ডধারীর মাঝে ৯ লাখ ৯৬ হাজার ৩শ ২০ কেজি চাল বিতারনের কার্যক্রম গত ১৭ আগষ্ঠ থেকে শুরু হয়েছে। ওই দিন উপজেলার ২ নং পাশাপোল ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজের উপস্থিতিতে বলাচলে ব্যাপক ঘটা করে এ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনির চাল বিতারনের উদ্বোধন ঘোষনা করেন। উদ্বোধনের দিন হতেই পাশাপোল ইউনিয়নে ৪ হাজার ২শ ৮৮ জন কার্ডধারীকে ২০ কেজি করে চাল বিতারণ শুরু হয়। স্থানীয় একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান ও আ’লীগ নেতা অবাইদুল ইসলাম সবুজ ইউনিয়নের সর্বোচ্চ ২ হাজার থেকে ২৫শ জনের মধ্যে কার্ড বিতারণ করেন। বাকি কার্ড তিনি কৌশলে আত্মগোপন করে রাখেন। রবিবার সন্ধ্যায় আত্মগোপনের রাখা কার্ডের সমুদয় চাল (প্রায় ১শ বস্তা) তার নিকটতম চাতাল ব্যবসায়ী পাশাপোল বাজারের শিমুল হোসেনের চাতালে নছিম ভর্তি করে পাঠিয়ে দেয়। বিষয়টি জানা জানি হলে মুহুর্তের মধ্যে সরকারী বস্তা পরিবর্তন করে সাদা চটের বস্তায় সমুদয় চাল ভর্তি করে আলমসাধু বোঝাই করে চৌগাছার উদ্যেশ্যে পাঠিয়ে দেয়। রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে উপজেলার গরীবপুর নিউমার্কেট এলাকায় দুই আলমসাধু বোঝাই চাল পৌছালে স্থানীয়দের সন্ধেহ হয়। এ সময় তারা আলমসাধুর গতীরোধ করে চাল দেখে তা সরকারী চাল প্রমানিত হওয়ায় তারা থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আকিকুল ইসলাম সঙ্গিয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সমুদয় চাল জব্দ করে থানায় নিয়ে আসেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে গোটা উপজেলা জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। খবর পেয়ে ওই রাতেই যশোর জেলা প্রশাসকের পক্ষে একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ছুটে আসেন চৌগাছায়। তিনি বিভিন্ন স্থানে এ বিষয় নিয়ে ব্যাপক খোঁজখবর নেন। স্থানীয় একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, চেয়ারম্যান সবুজ যে ২৫ শ কার্ডধারীকে ভিজিএফের চাল দিয়েছেন সেখান থেকেও তিনি ৩ থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত চাল কম দিয়েছেন। সব মিলিয়ে তিনি প্রায় ১শ বস্তা চাল আত্মসাতের পরিকল্পনা করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ বলেন, আমি কোন চাল আত্মসাত করেনি। ভিজিএফের কার্ডধারী ব্যাক্তিরা আমার নিকট থেকে চাল নিয়ে তা কালোবাজারে বিক্রির জন্য আলমসাধু যোগে চৌগাছার উদ্যেশ্যে রওনা দেয়। এরসাথে আমার কোন সম্পৃক্তা নেই বলে তিনি জানান। থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আকিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে আলমসাধুসহ চাল জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে। তবে এখনও কোন মামলা হয়নি বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইবাদত হোসেন বলেন, চাল আত্মসাতের ঘটনাটি আমি শুনেছি। উচ্চতর তদন্ত দল ইতোমধ্যে তদন্তে কাজ শুরু করেছেন। তদন্তে প্রমানিত হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here