খবর ৭১ঃ রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার চুড়িহাট্টার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পাঁচদিন পর অগ্নিদগ্ধ আনোয়ার হোসেন (৫৫) ও মো. সোহাগ (২৫) নামে আরও দুইজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এনিয়ে দেশের ইতিহাসে অন্যতম এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৯ জনে।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ১১টার দিকে সোহাগ ও রাত সোয়া ১০টার দিকে অগ্নিদগ্ধ আনোয়ার হোসেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তারা মারা যান।
এই অগ্নিকাণ্ডে আহত যে কজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তার মধ্যে দুইজনের মৃত্যু হল। প্রাথমিকভাবে সোহাগের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। সোহাগের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া।
সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনোয়ার হোসেন নামে অগ্নিদগ্ধ একজনের মৃত্যু হয়। বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনোয়ারের মৃত্যু ঘটে।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি অগ্নিকাণ্ডের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে আরও আটজনের সঙ্গে ভর্তি করা হয়েছিল আনোয়ারকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ৫৫ বছর বয়সী আনোয়ারের দেহের ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে। রিকশাচালক আনোয়ারের বাবার নাম আলী হোসেন। তার বাড়ি রাজবাড়ী জেলার রায়নগর গ্রামে। কামরাঙ্গীরচরের ছাতা মসজিদের পূর্বপাশে স্ত্রী হাজেরা বেগম এবং তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকতেন আনোয়ার। একমাত্র মেয়ে বীথির আবদারে তার জন্য বিরিয়ানী কিনতে সেদিন চকবাজারে গিয়ে আগুনের মধ্যে পড়েছিলেন আনোয়ার।
তিনি বলেন, কেমিকেল বার্ন কোনো সময় সুপারফিশিয়াল বার্ন হয় না, ডিপ বার্ন হয়। এই রোগীদের সবারই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। আগুনের ক্ষত নিয়ে বার্ন ইউনিটে ভর্তি থাকা সাতজন হলেন- আইসিইউতে থাকা রেজাউলের (২১) শরীরের ৫১ শতাংশ, জাকিরের (৩৫) শরীরের ৩৫ শতাংশ, মোজাফফরের (৩২) শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়েছে। ওয়ার্ডে থাকা হেলালের (১৮) শরীরের ১৬ শতাংশ, সেলিমের (৪৪) শরীরের ১৪ শতাংশ, মাহমুদুলের (৫২) শরীরের ১৩ শতাংশ এবং সালাহউদ্দিনের (৪৫) শরীরের ১০ শতাংশ পুড়েছে। অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের স্মরণে সোমবার বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হয়।