অবৈধ সম্পদ পুনরুদ্ধারে সার্বজনীন নীতিমালা প্রয়োজন : দুদক

0
273

খবর৭১: অবৈধ সম্পদ পুনরুদ্ধারে একটি সার্বজনীন নীতিমালা প্রয়োজন বলে মনে করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুদকের অডিটোরিয়ামে এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

এশিয়ান ডেভালপমেন্ট ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ সংক্রান্ত কারিগরি প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টেকনোহ্যাভেন-জেভির সঙ্গে এ সভা হয়।

কমিশনের সম্পদ পুনরুদ্ধার ইউনিটের কার্যক্রমের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘অতীতে দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান দুদকের মামলার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। এটি দুর্ভাগ্যজনক। কমিশনের কর্তব্য হবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক রেখে আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়া। আর এটি বাস্তবায়নে সম্পদ পুনরুদ্ধার ইউনিটের একটি সার্বজনীন নীতিমালা প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী ব্যক্তি কমিশনের মামলা চলাকালে মৃত্যুবরণ করলে তার অবৈধ সম্পদের কি হবে? এ বিষয়টি মাথায় রেখে নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টেকনোহ্যাভেন-জেভি’ এর নির্বাহীদের সুনজরদারি প্রয়োজন।’

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘দুদকের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গৃহীত এ প্রকল্প তখনই স্বার্থক হবে- যদি কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা, বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধা বৃদ্ধিতে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে। দুদকের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এডিবি’র অর্থায়নে কারিগরি প্রকল্প কমিশনের কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে।’

কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা এমন পদ্ধতির সংযোজন করবেন যাতে প্রতিষ্ঠানটি পদ্ধতিকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। কমিশনের প্রতিটি অনুসন্ধান বা তদন্ত কিংবা অন্যান্য আনুষাঙ্গিক সকল কার্যক্রম নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য অবশ্যই মনিটরিংয়ের স্বার্থে একটি আইটি বেইজড সিস্টেম চালু করা প্রয়োজন। বর্তমান ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে প্রতিটি নথি মনিটরিং করা প্রায় অসম্ভব।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান, তদন্ত, প্রসিকিউশন, দুর্নীতি প্রতিরোধসহ সব কার্যক্রম মনিটরিংয়ের প্রযুক্তিনির্ভর তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক পদ্ধতির সংযোজন চায় কমিশন। দুদকের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে দুর্নীতির অভিযোগ গ্রহণ প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি প্রযুক্তিনির্ভর করা। এছাড়া কমিশনের সব অনুসন্ধান ও তদন্ত নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন করা।’

এ সময় এডিবি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পারকাস বলেন, ‘দুর্নীতিপরায়নদের প্রসিকিউট (বিচার) করার চেয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধই উত্তম। এক্ষেত্রে প্রযুক্তিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যদি কমিশনের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে পর্যাপ্ত ডাটা থাকে তবে এ প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করা আরও সহজ হবে। পাশাপাশি অপরাধীদের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে দ্রুত বিচারের মখোমুখিও করা যাবে।’

সাত কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে দুর্নীতির অভিযোগ যাচাই-বাছাই, অনুসন্ধান, তদন্ত, প্রতিরোধ ও মামলা পরিচালনার কাজে নিবিড়ভাবে তদারকির জন্য ওয়েবভিত্তিক সফটওয়্যারের সংযোজন। ২০২০ সালে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন টেকনোহ্যাভেনের কনসাল্টেন্ট ও দুদকের সাবেক কমিশনার মো. আবুল হাসান মনযুর মান্নান, দুদক সচিব ড. মো. শামসুল আরেফিন, মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী, মহাপরিচালক (লিগ্যাল) মো. মঈদুল ইসলাম ও মহাপরিচালক (তদন্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here