বিদেশি ক্রেতাদের অসহযোগিতা, গার্মেন্টস মালিকের কান্না

0
441
বিদেশি ক্রেতাদের অসহযোগিতা, গার্মেন্টস মালিকের কান্না

খবর৭১ঃ
বিদেশি ক্রেতাদের অসহযোগিতার কারণে শ্রমিকদের বোনাস দিতে না পারায় কান্না করেছেন বাংলাদেশের এক গার্মেন্টস মালিক। আর সেই কান্নার খবর এখন সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম।

১৯ মে এই সংবাদটি প্রকাশ হয়েছে লন্ডনের অ্যাপারেল ইনসাইডার ডটকম নামের একটি ওয়েবসাইটে।

সেখানে বলা হয়, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে নিজের কারখানার দুই হাজার শ্রমিককে ঠিকমতো বোনাস দিতে না পেরে কষ্ট ও হতাশা প্রকাশ করেছেন মোস্তাফিজ উদ্দিন। বিদেশি ক্লায়েন্টের কাছ থেকে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওনা রয়েছে তার।

মোস্তাফিজ উদ্দিনের চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ইপিজেড এলাকায় ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডে নামে কারখানা রয়েছে। এই কঠিন সময়ে অর্ডার করা পণ্যের বিপরীতে অনেক বিদেশি ক্রেতা পাওনা টাকা দিতে চাচ্ছেন না। ফলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন মোস্তাফিজ উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘আমার বিদেশি ক্রেতারা ফেব্রুয়ারি থেকে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এখন এমন অবস্থায় এসেছি, আমার কাছে শ্রমিকদের দেওয়ার মতো কোনো টাকা নেই।’

২০০৯ সালে চট্টগ্রামে কারখানা দেন মোস্তাফিজ উদ্দিন। বিভিন্ন ট্রেড শো এবং ব্যবসায়ী সম্মেলন করে তিনি পরিচিতি পেয়েছেন ‘ডেনিম মোস্তাফিজ’ নামে। শ্রমিক-কর্মচারীদের সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কারণে বিদেশি ক্রেতাদের নজরে আসেন। তাকে নিয়ে দেশের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমেও ফিচার লিখা হয়।

মোস্তাফিজ উদ্দিন দেশ-বিদেশে অনেক সম্মেলনের বক্তা ছিলেন। ২০১৮ সালে কোপেনহেগেন ফ্যাশন সম্মেলনে পোশাক সরবরাহ একটি নিয়মের মধ্যে আনার কথা বলে প্রশংসিত হয়েছিলেন।

এই গার্মেন্টস মালিক জানান, শ্রমিকদের হাতে বেতন-বোনাস তুলে দেওয়ার তাড়না থেকে টানা ১০ দিনের বেশি বিদেশি ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু ইউরোপ কিংবা আমেরিকার কোনো দেশ থেকেই টাকা আসেনি।

মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘শেষ কর্মদিবসে এসেও টাকা না পেয়ে শ্রমিকদের কী করে খালি হাতে বিদায় করব তা ভাবতেই কান্না চলে আসে।’

তিনি তার ফেসবুকে লিখেন, ‘বোনাস দিয়ে শ্রমিকদের বাড়ি পাঠানো আমার বড় দায়িত্ব ছিলো। কিন্তু এই সময়ে এটা আমার জন্য অনেক কঠিন কাজ ছিলো। কারণ পশ্চিমা ক্রেতারা টাকা পরিশোধ করেননি।’

আরো লিখেন, ‘গ্লোবাল ব্র্যান্ডস গ্রুপ (জিবিজি) তারা টাকা দেয়নি। আর্কেডিয়া গ্রুপ তাদের অর্ডার বাতিল করেছে।’

বিদেশি ক্রেতারা অসহযোগিতা করলেও শেষপর্যন্ত তিনি শ্রমিকদের বোনাস দিয়েছেন। বলেন, ‘শ্রমিকরা আমার কারখানার হার্ট। তাদের বোনাস দেওয়া কঠিন ছিলো। কিন্তু বন্ধু এবং আত্মীয়স্বজন থেকে টাকা সংগ্রহ করে তাদের বোনাস দিয়েছি।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here