আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক বন্দর শ্রমিককে কুপিয়ে আহত করেছে দূবৃত্বরা: মামলার আসামী ৩২

0
744
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক বন্দর শ্রমিককে কুপিয়ে আহত করেছে দূবৃত্বরা: মামলার আসামী ৩২

শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : বেনাপোল বন্দরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কালাম সরদার(৪৫) নামে এক বন্দর শ্রমিককে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করেছে দূবৃত্বরা। সোমবার সকালে বেনাপোলের ছোটআঁচড়া বাইপাস সড়কে পাথর লোড-আনলোডের সময় এক সন্ত্রাসীয় হামলা তাকে কুপিয়ে আহত করা হলে অন্যান্য শ্রমিকরা মিলে তাকে উদ্ধার করে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।

আহত কালাম বেনাপোল পোর্ট থানার খড়িডাঙ্গা গ্রামের দ্বীন মোহাম্মদের ছেলে এবং বেনাপোল বন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক উইনিয়ন ৯২৫’র গ্রুপ সরদার।

এ সন্ত্রাসীয় হামলায় রঘুনাথপুর গ্রামের জাহান আলীর ছেলে দুল্লী ও দৌলতপুর গ্রামের মিজানের ছেলে শরিফুল ইসলামসহ শামীম, স¤্রাট, জুয়েল, কামাল এবং রাজু নামে আরো জন শ্রমিক সরদার আহত হয়েছে বলে জানান শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

আহত কালাম সরদার জানান, সকালে তাদের গ্রুপের শ্রমিকদের নিয়ে বেনাপোল ছোট আঁচড়া বাইপাস সড়কে পাথর লোড-আনলোডের কাজ করতে যান। এসময় একদল সন্ত্রাসী প্রাভেটকারে এসে চলন্তবস্থায় কর্মরত শ্রমিকদের উপর গাড়ি উঠিয়ে দিতে যায়। এসময় উক্ত প্রাইভেটকারের গতিবিধি লক্ষ্য করতে পেরে শ্রমিকরা সরে যাওয়ার চেষ্টা করলে কারের দরজা খুলে বাড়ি মারতে থাকে। একপর্যায়ে প্রাইভেটকার থামিয়ে বেনাপোল পৌর মেয়রের আর্শিবাদপুষ্ঠ কাউন্সিলর রাশেদের নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী লাঠি-সোঁটা, বোমা, দেশিয় অস্ত্র ও পিস্তল নিয়ে শ্রমিকদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। যার প্রতিবাদ করলে কাউন্সিলর রাশেদ ভোজালী বের করে আমার বাম রানের উপর কোপ মারে। খবর পেয়ে বন্দরের সকল শ্রমিকরা লাঠি-সোঠা নিয়ে দৌড়ে আসতে থাকলে তারা বোমার বিস্ফোরন ও গুলির আওয়াজ করতে করতে পালিয়ে যায়।

এসময় মুর্হুমুহু বোমার বিস্ফোরণ ও গুলির আওয়াজে এলাকার জনসাধারণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, দোকানদাররা তাদের দোকান বন্ধ করে দেন। স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভয়ে সংকুচিত হয়ে চিৎকার করতে থাকে। অবিভাবকরা সন্তানদের নিরাপদে রাখার স্বার্থে স্কুলগুলোতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সবাই নিরুপায়। কয়েক ঘন্টার জন্য বন্দর নগরী বেনাপোল আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়। শ্রমিকরা ঠায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশের বলিষ্ঠ হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। দুপুরের দিকে শুরু হয় বেনাপোল বন্দরের থেমে থাকা পণ্য লোড-আনলোড, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যসহ সকল ধরণের কার্যক্রম।

এ বিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) মামুন খান জানান, অপ্রীতিকর এ সন্ত্রাসীয় হামলার ঘটনা শুনে সঙ্গেসঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছি। আহতদের শারিরিক অবস্থা দেখেছি। এ সন্ত্রাসীয় হামলায় ৩২ জনের নাম উল্লেখ্যসহ অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং- ৪৬। তারিখ-২৮.১০.২০১৯। এ বিষয়ে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। অতিদ্রুত হামলাকারীদের আটক করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে যশোরের নাভারন সার্কেল এএসপি জুয়েল ইমরান বলেন, বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনামাত্র উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপচারিতার মাধ্যমে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ খুবই দক্ষতার সাথে অল্প সময়ের মধ্যে উত্তপ্ত বেনাপোল বন্দর এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি। আহতদের সাথে দেখা করে তাদের শারিরিক খোজখবর ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এ বিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি মামলা হয়েছে। তবে, শ্রমিকের উপর হামলাকারিরা যতো শক্তিশালী বা ক্ষমতার অধিকারি হোক না কেন, তাদেরকে কোন অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না।

এদিকে সন্ত্রাসীয় হামলায় গুরুতর আহত হয়ে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন কালাম সরদারকে দেখতে যান এবং তার সার্বিক চিকিৎসার খোঁজখবর নেন শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুজ্জামান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও যশোর জেলা পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল, বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মনিরুজ্জামান ঘেনা, শার্শা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শার্শা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম সর্দার, বেনাপোল পৌর সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জুলফিকার আলী মন্টু, সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেনসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের সকল সহযোগী সংগঠন ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here